ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার প্রশংসায় পুতিন, পারমাণবিক চুক্তির ইঙ্গিত

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের “সক্রিয়” প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেইসঙ্গে আলাস্কায় শুক্রবারের (১৫ আগস্ট) শীর্ষ বৈঠকে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। খবর সিএনএনের।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ক্রেমলিনে উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, “বর্তমান মার্কিন প্রশাসন, আমার মতে সংঘর্ষ থামাতে, সংকট নিরসন করতে এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য উপকারী চুক্তিতে পৌঁছাতে যথেষ্ট সক্রিয় ও আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”
ভ্লাদিমির পুতিন জানান, আসন্ন শীর্ষ বৈঠকের লক্ষ্য হবে “দুই দেশের মধ্যে, ইউরোপে এবং সামগ্রিকভাবে বিশ্বে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্ত তৈরি করা।” পুতিন বলেন, আলোচনার “পরবর্তী ধাপগুলোতে” কৌশলগত আক্রমণাত্মক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হলে এই শান্তি আরও দৃঢ় হবে।
যদিও তিনি সুনির্দিষ্ট করে বলেননি কোন ধরনের চুক্তি হতে পারে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে অধিকাংশ কৌশলগত অস্ত্র চুক্তি পারমাণবিক অস্ত্র বা পারমাণবিক সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সীমিত করার ওপর ভিত্তি করে। বর্তমানে কার্যকর নিউ স্টার্ট চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশকে আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক অস্ত্রের নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হবে, তবে এ চুক্তি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে।
সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে চলতি মাসে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার কাছে দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন কৌশলগতভাবে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভের “উস্কানিমূলক” মন্তব্যকে দায়ী করেন।

পুতিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানান, শুক্রবারের শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা প্রথমে দোভাষীর সহায়তায় একান্ত বৈঠক করবেন, এরপর ব্যবসায়িক মধ্যাহ্নভোজে আলোচনার পরিসর বাড়াবেন। আলোচনার মূল বিষয় হবে ইউক্রেন যুদ্ধ, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলন হবে।
রাশিয়ার আলোচক দলের পাঁচ সদস্যের মধ্যে থাকছেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলোউসোভ, অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানোভ এবং রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ।
এদিকে, ইউক্রেন ও ইউরোপকে শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে কিয়েভকে হয়তো অপ্রত্যাশিত ছাড় দিতে চাপ দেওয়া হতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে, ইউরোপীয় নেতারা বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তারা জানান, ট্রাম্প তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং ভবিষ্যত আলোচনায় ইউক্রেনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মত দিয়েছেন।