থাই-কম্বোডিয়া সংঘাত : মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় সমাধানে আগ্রহী ব্যাংকক

কম্বোডিয়ার সঙ্গে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য থাইল্যান্ড মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘাত চলছে। তাদের বিতর্কিত ৮০০ কিলোমিটার সীমান্তের কিছু অংশে কামান নিয়ে দুই দেশের স্থলবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার এই সংকট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় তোলা হবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি বড় শক্তি এই যুদ্ধ থামাতে ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোরন্দেজ বালানকুরা বলেছেন, ব্যাংকক আলোচনার জন্য প্রস্তুত, মালয়েশিয়ার সহায়তা পেলে তারা তাতে আগ্রহী।
নিকোরন্দেজ এএফপিকে বলেন, আমরা প্রস্তুত, যদি কম্বোডিয়া কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনা করে, এমনকি মালয়েশিয়ার মাধ্যমেও এই সমস্যার সমাধান করতে চায়…। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের (কম্বোডিয়ার) কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
মালয়েশিয়া বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সভাপতিত্ব করছে, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া উভয়ই এই জোটের সদস্য।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেটের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি উভয় পক্ষকে যুদ্ধ বন্ধ করে কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আনোয়ার লিখেছেন, ব্যাংকক ও নমপেন (কম্বোডিয়ার রাজধানী) উভয়ের এই পথ বিবেচনা করার জন্য যে ইতিবাচক ইঙ্গিত ও আগ্রহ দেখিয়েছে, আমি তাকে স্বাগত জানাই।

তবে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো উভয় পক্ষই মারাত্মক কামান হামলা চালিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম সতর্ক করে বলেছেন, এই সংঘর্ষ একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপান্তরিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া। আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) টানা দ্বিতীয় দিনের মতো উভয় দেশ একে অপরের ওপর ভারী গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, কাম্বোডিয়ার ওড্ডার মেঞ্চি প্রদেশের প্রশাসনিক মুখপাত্র মেথ মিয়াস ফেকডি জানিয়েছেন, একটি শিশুসহ একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং পাঁচজন আহত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৫০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।