বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনতে চায় ইউক্রেন

রাশিয়ার অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে গম আমদানির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার জন্য অনুরোধ জানাবে ইউক্রেন। এই বাণিজ্য বন্ধে ঢাকাকে দেওয়া তাদের পূর্ববর্তী সতর্কবার্তায় সাড়া না দেওয়ায় কিয়েভ এ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত ইউক্রেনের একজন শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
রয়টার্সের কাছে আসা নথিপত্র অনুযায়ী, নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইউক্রেন দূতাবাস চলতি বছর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছে। এসব চিঠিতে কথিত ‘চুরি করা’ এবং রাশিয়ার কাভকাজ বন্দর থেকে পাঠানো দেড় লাখ টনেরও বেশি শস্য বাংলাদেশ ঢুকতে না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক জানান, ঢাকা ওই কূটনৈতিক যোগাযোগের কোনো জবাব দেয়নি। পোলিশচুকের দাবি করেন, কিয়েভের গোয়েন্দা তথ্যে দেখা গেছে, রাশিয়ার কিছু সংস্থা অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে সংগৃহীত শস্য রাশিয়ান গমের সঙ্গে মিশিয়ে রপ্তানি করছে। যাতে শস্যের উৎস শনাক্ত করা কঠিন হয়। রাষ্ট্রদূত এটিকে ‘একটি অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহকর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করব এবং বিনীতভাবে তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলব।’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
তবে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শস্যের উৎস অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে হলে রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করবে ঢাকা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ কোনো চুরি করা গম আমদানি করব না।
গত ১১ জুনের চিঠিতে বাংলাদেশকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘চুরি করা শস্য’ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞার ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে পারে। এমন ক্রয় ‘মানবিক দুর্ভোগ’ বাড়াবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বাহিরেও বিস্তৃত হতে পারে। নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নেতৃত্বরাও। যারা জেনেশুনে এই আমদানিকে সহজ করে দিচ্ছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক ও নিরাপত্তা নীতির মুখপাত্র অনিটা হিপার অবশ্য রয়টার্সকে জানিয়েছেন, প্রশ্নবিদ্ধ জাহাজগুলো বর্তমানে কোনো নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘ভবিষ্যতে জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে চুরি করা ইউক্রেনীয় শস্য পরিবহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে।’