মোদিকে জি–৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিরোধিতার মুখে মার্ক কার্নি

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গত শুক্রবার (৬ জুন) আলবার্তায় অনুষ্ঠিতব্য জি–৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। আগামী ১৫ থেকে ১৭ জুন অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে মোদির আমন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিনের জল্পনার অবসান ঘটল। গত শুক্রবার আমন্ত্রণ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনন্দ প্রকাশ করে লিখেছেন, তিনি জি–৭ সম্মেলনে যোগ দিতে উন্মুখ। খবর সিএনএনের।
তবে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কানাডায় বসবাসকারী শিখ সম্প্রদায়ের একাংশের রোষানলে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্নি। স্বাধীন খালিস্তানের সমর্থক অভিবাসী শিখ সম্প্রদায়ের সদস্যরা এ কারণে প্রধানমন্ত্রী কার্নির তীব্র সমালোচনা করছেন। তাদের অভিযোগ, শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে এবং এ বিষয়ে তদন্তও চলছে। এই অবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো উচিত হয়নি।
খালিস্তানপন্থী শিখ সম্প্রদায়ের এই অসন্তোষ ও যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী কার্নি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রধানমন্ত্রী কার্নি ওই প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, অভিযোগটি বিচারাধীন ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়।
কানাডার আলবার্তার কানানাস্কিসে ৫১তম জি–৭ শীর্ষ সম্মেলন বসছে। গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও প্রতিবার অন্য কয়েকটি দেশকে এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। গত ছয়টি সম্মেলনে ভারত বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে যোগ দিয়েছে। কানাডা এবার এই সম্মেলনের উদ্যোক্তা, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ওই হত্যায় ভারতের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। যদিও ভারত তখন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল।
সেই থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। দুই দেশই পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার করে। তবে কানাডায় নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে শুরু করে। নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে অভিনন্দন জানান মোদি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দকে ফোন করেন। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল, সম্পর্কের শীতলতা হয়তো কাটতে চলেছে।

শিখ সম্প্রদায়ের একাংশের বিরোধিতা সত্ত্বেও মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী কার্নি গণমাধ্যমকে বলেছেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারতের গুরুত্ব অনুধাবন করেই এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র। বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনের কেন্দ্রে তার অবস্থান। সেই কারণেই তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।