পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিনেও ব্যাপক সহিংসতা, একজনের মৃত্যু

আগামীকাল শনিবার (৮ জুলাই) ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগের দিনও হয়েছে ব্যাপক সহিংসতা। এতে একজন মারা গেছে, উদ্ধার হয়েছে প্রচুর বোমা। যদিও সহিংসতা ও বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুরু থেকেই সঙ্গী। জানা গেছে, মুর্শিদাবাদের রানিনগরে খুন হন কংগ্রেস প্রার্থীর স্বজন অরবিন্দ মণ্ডল, যিনি নিজেও একজন কংগ্রেসকর্মী।
অরবিন্দ বাড়ির সামনে বসেছিলেন, সেখানেই তাকে বেধড়ক মারা হয়। তার বুকে পেস মেকার ছিল। অরবিন্দের বুকে লাথি মারা হয়। তারপর তাকে বাঁচানো যায়নি। অভিযোগ আছে, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূল প্রার্থী উল্টে অভিয়োগ করেছেন, অরবিন্দ মণ্ডল তাকে মারতে গিয়েছিলেন।
এই ঘটনা যখন ঘটে তখন রাজ্যপাল আনন্দ বোস মুর্শিদাবাদে ছিলেন। ভোটে শান্তি আনার জন্য রাজ্যপাল এবার নিজেই অশান্ত জেলাগুলোতে ঘুরছেন। এর আগে উত্তরবঙ্গ গেছেন, ভাঙর, বাসন্তী গেছেন, এবার মুর্শিদাবাদও গেলেন। তিনি রাজভবনে একটা পিসরুমও খুলেছেন। কেউ সহিংসতার কোনো অভিযোগ করলে তা পাঠানো হচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারের কাছে।
মুর্শিদাবাদ পৌঁছে মৃত তৃণমূল নেতার বাড়িতেও গেছেন রাজ্যপাল। নবগ্রামে তৃণমূল প্রার্থী মোজাম্মেল শেখকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যপাল আনন্দ বোস তার বাড়ি গিয়ে পরিবারের মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন।
কোচবিহারের দিনহাটায় চারজন বিজেপি কর্মীকে গুলি করে মারার চেষ্টা হয়। তারা প্রাণে বাঁচলেও তাদের গায়ে গুলি লেগেছে। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরাই এই কাজ করেছে। তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে।
বিজেপিকর্মী বিজয় বর্মণের বাড়ির সামনে কর্মীরা বসেছিলেন। তখন বাইকে করে কয়েকজন এসে গুলি চালায়। বোমা ছোড়ে। তাতেই চারজন আহত হন। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বীরভূমের দুবরাজপুরে দুইশটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদেও বোমা উদ্ধার হয়েছে। এই জেলায় বোমা তৈরি করতে গিয়ে দুজন আহত হয়েছেন। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে তৃণমূলের অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাসন্তীতে বিজেপিকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। নদীয়ার ফুলিয়ায় বিজেপি প্রার্থীর বাড়ির সামনে থান, গীতা ও ধুপ রেখে দেওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
এদিকে, ভোটের আগের দিনও জানা যায়নি, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কিনা। এর আগে কমিশন ঠিক করেছিল, প্রতি বুথে একজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটর বিএসএফের আইজি জানিয়ে দেন, বুথে একজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে রাখা যাবে না। কারণ, এখন পশ্চিমবঙ্গের যা অবস্থা, তাতে একজন বুথে থাকলে তার প্রাণ নিয়ে আশঙ্কা থাকছে। কোনো কেন্দ্রে দুটি বুথ থাকলে অন্তত পাঁচজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে সেখানে ডিউটি দিতে হবে। স্পর্শকাতর কেন্দ্র হলে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। ফলে সব কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন ভোটের আগের দিনও থাকছে।