ইরাকের উত্তরাঞ্চলে মরু এলাকায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন একদল ইরানি কুর্দি নারী। 

নারী যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে আইএস জঙ্গিরা যখন মর্টার হামলা চালায়, তখন তাঁরা প্রথমে লাউড স্পিকারের মাধ্যমে গান গেয়ে এর জবাব দেন। পরে তাঁরা মেশিনগান থেকে গুলি ছোড়েন। এটিই হচ্ছে তাঁদের যুদ্ধের কৌশল।

প্রায় ২০০ নারী পেসমের্গা (ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কুর্দিস্তানের সেনাবাহিনী) যোদ্ধার একজন হচ্ছেন মনি নাসরাল্লাহপৌর (২১)। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের রাগাতে চেয়েছিলাম। আমরা দায়েশকে (আইএস) জানাতে চেয়েছিলাম, আমরা ভীত নই।’ কট্টরপন্থী সুন্নি জঙ্গিদের জন্য এসব নারী যোদ্ধা ইরান ত্যাগ করেছেন।
 
আইএস সংগীত ও গান গাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। নারীদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ২০১৪ সালে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে হামলা এবং ইরাক ও সিরিয়ার কিছু অংশে খিলাফত প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর জঙ্গিরা শত শত নারীকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছে। 

কুর্দি নারীরা প্রায় ৬০০ যোদ্ধার একটি বড় সশস্ত্র ইউনিটের অংশ। এই ইউনিট কুর্দিস্তান ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে যুক্ত। কুর্দিস ভাষায় পিএকে নামে পরিচিত এই গ্রুপ ইরাকি ও কুর্দি বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। ইরাকের মসুল থেকে আইএসকে বিতাড়িত করতে অভিযান পরিচালনায় এই দুটি বাহিনীকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট সহযোগিতা করেছে। 

একে ৪৭ রাইফেল হাতে নাসারাল্লাহপৌর আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের মাটি রক্ষা করার জন্য লড়াই করছি, তা ইরান বা ইরাকের যেখানকার কুর্দিস্তানই হোক না কেন? দায়েশ না অন্য কোনো গ্রুপ আমাদের মাটি দখল করেছে, সেটা কোনো বিষয় না।’ তারা নারীদের ব্যাপারে ভীত।’

তাদের উপস্থিতি ইরাকের উত্তরাঞ্চলে  যুদ্ধক্ষেত্রের জটিলতাকেই মনে করিয়ে দেয়। যেখানে নারীরা সম্প্রতি ফাদিলিয়া গ্রাম থেকে আইএসকে হটাতে ইরাকি পুরুষ কুর্দি যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

আভিন ভায়সি (৩২) একটি ভারী মেশিনগান নিয়ে রাস্তা রাস্তায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা নারীদের ভয় পায়। এটা সত্য যে দায়েশ বিপজ্জনক। কিন্তু আমরা তাদের ভয় করি না।’ এই অভিযানে গ্রুপের এক নারী যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
জঙ্গিদের নারী নির্যাতনের খবর প্রকাশে অন্যান্য পেশমের্গার মতো ভায়সিও রাগান্বিত। তিনি এই বিষয়টি নিজেই দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গালে কুর্দি পতাকা আঁকা ভায়সি বলেন, ‘আমি টেলিভিশনে দেখেছি, দায়েশ নারীদের ওপর নির্যাতন করছে। এটি দেখে আমার রক্ত টগবগ করেছে। এরপরই আমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিই।’