পাউডার থেকে ক্যানসার, জনসনকে জরিমানা

বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডার ব্যবহারের কারণে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক নারীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির একটি আদালত ওই নারীর পরিবারকে ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫৬২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কোম্পানিটির প্রতি নির্দেশ দেন।
এর মধ্যে ১০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে এবং ৬২ মিলিয়ন ডলার শাস্তিমূলক খেসারত হিসেবে ওই পরিবারকে দিতে হবে।
গত বছর জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৬২ বছর বয়সে মারা যান বার্মিংহামের জ্যাকুলিন ফক্স। যিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডার ব্যবহার করে আসছিলেন। এই পাউডারটি তিনি তাঁর ব্যক্তিগত পরিচ্ছনতার জন্য ব্যবহার করতেন। পরে জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে এই পাউডারটিকেই দায়ী করেন তিনি।
প্রায় তিন বছর আগে জ্যাকুলিনের এই ক্যান্সার ধরা পড়ে। এর পরই দেশজুড়ে এক হাজার ২০০ নারীর সঙ্গে মিলে জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এই ব্র্যান্ডের বেবি পাউডারে যে খনিজ পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা ভয়ঙ্কর বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
গত সোমবার প্রথম মামলা হিসেবে জ্যাকুলিন ফক্সের ঘটনার রায় দেওয়া হয়।
মিসৌরির একটি আদালত রায়ে জ্যাকুলিনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭২ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর পরিবারের পক্ষের আইনজীবী জিম অন্টার ওয়াশিংটন টাইমসকে এসব কথা জানিয়েছেন।
জ্যাকুলিন ফক্সের ছেলে মারভিন সালটার বলেন, ‘আমাদের পরিবারে জনসন পাউডার ব্যবহার ছিল দাঁত ব্রাশ করার মতোই নিত্য নৈমিত্তিক কাজ।’
পরীক্ষায় দেখা যায়, জ্যাকুলিন ফক্সের জরায়ু প্রথমে জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর সেটিই ক্যানসারে রূপ নেয়।
এদিকে গত মঙ্গলবার জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভোক্তাদের স্বাস্থ্য আর নিরাপত্তাই আমাদের সবচেয়ে অগ্রাধিকারের বিষয় এবং আমরা বিচারের রায়ে হতাশ।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের ট্যালকম পাউডার বহু দশক ধরে নিরাপদ হিসেবে ব্যববহৃত হয়ে আসছে। যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও রয়েছে।’
তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে জনসন অ্যান্ড জনসন আপিল করতে পারে বলে জানা গেছে।
আদালতে বিচারক প্যানেলের নয় নারী ও এক পুরুষ বিচারক জ্যাকলিন ফক্সের পক্ষে রায় দেন। তবে দুজন পুরুষ বিচারক তার বিপক্ষে রায় দেন।
বিচারকদের একজন জিওরমে কেনড্রিক বলেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের উচিত ছিল পাউডারের বোতলের গায়ে সতর্কবার্তা উল্লেখ করা। তবে তারা সেটা করেনি।
এদিকে এই বিতর্কের রেশ ধরে বিশ্বজুড়ে কমেছে জনসন অ্যান্ড জনসন পণ্য বিক্রির হার।