মমতা দেখিয়ে দিলেন, কেন তিনি দিদি

কলকাতার রাস্তায় এক মোটরসাইকেল আরোহী দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন দিদি। একই দিন, অর্থাৎ গতকাল মঙ্গলবার শহরে এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেছিল উচ্ছৃঙ্খল এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেন দিদি।
যে দিদির কথা বলা হচ্ছে, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম থেকে একটি দাপ্তরিক কাজ শেষে সচিবালয়ের নবান্ন ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজির ভাস্কর্যের সামনেই একজন আহত মোটরসাইকেল আরোহীকে পড়ে থাকতে দেখে গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেন তিনি। গাড়ি থেকে নেমে নিজেই যান সেই আহত ব্যক্তির কাছে। তাঁর সঙ্গে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স খবর দেওয়ার। তবে এর পরও একমুহূর্ত সময় নষ্ট করতে চাইলেন না মুখ্যমন্ত্রী। অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হবে ভেবে তাঁর গাড়িবহরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিলেন আহত ব্যক্তিটিকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে। এর কিছুক্ষণ পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আহত প্রসনজিৎ কুণ্ডুকে কাছের এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে। সেখানে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন প্রসনজিৎ।
এসব কাজ সেরে যখন নবান্ন ভবনে পৌঁছালেন মমতা, তখন খবর পেলেন সকালে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। কলকাতা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের পূর্ব মেদিনীপুরের কোনটাই এলাকা থেকে সচিবালয়ে শিক্ষাবৃত্তির আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে আসা দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা ঘটেছে। খুব সকালে সচিবালয়ে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল ওই ছাত্রী। এ সময় এক মোটরসাইকেল আরোহী ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করছিল। এর প্রতিবাদ করেন ওই ছাত্রীর মা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক ছাত্রীটির ওড়না ধরে টান দেয়।
সচিবালয়ের মতো এত উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাসম্পন্ন স্থানে এ রকম ঘটনায় বিহ্বল হয়ে পড়েন ওই ছাত্রী ও তাঁর মা। পরে প্রাতঃভ্রমণে বের হওয়া কিছু মানুষ এসে তাঁদের রক্ষা করেন।
গতকাল সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে পৌঁছার পর এ ঘটনার কথা জানতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে অবিলম্বে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। সে সঙ্গে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
নির্দেশ অনুযায়ী মন্দিরতলা এলাকার অনিল ঠাকুর নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য অভিযোগে মামলা করা হয়। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে অনিল।