ভারতের বিমানবাহিনীতে নতুন ‘বড়ি অস্ত্র’

ভারতের বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে কিছু নতুন অস্ত্র। তবে এসব অস্ত্র কোনো ভয়ানক শক্তিশালী মিসাইল বা বাংকার বিধ্বংসী স্মার্ট বোমা নয়। বরং এর বদলে নিরীহ চেহারার কিছু বড়ি বা ট্যাবলেটই বিমানবাহিনীর নতুন অস্ত্র।
মূলত দুই ধরনের বড়ি যুক্ত হয়েছে ভারতের বিমানবাহিনীতে। এর একটির নাম ‘গো’, আর অন্যটির নাম ‘নো-গো’। বিমানবাহিনীর সদস্যদের জন্য অনুমোদিত এই বড়ি এখন ভীষণ জনপ্রিয়। পাইলটরা তাদের সতর্কতার মাত্রা বাড়াতে, যুদ্ধের দক্ষতা বাড়াতে এবং ঘুম কম হওয়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে এই বড়ি সেবন করছেন।
‘গো পিল’ এক ধরনের মোডাফিনিল। বিশ্বজুড়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সতর্কতা বাড়াতে ও ক্লান্তি দূর করতে এই পিল সেবন করা হয়। অন্যদিকে ‘নো গো পিল’-এ আছে জোলপিডাম, ইনসমনিয়া বা অনিদ্রার চিকিৎসা করতে এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় বিমানবাহিনীর পরিচালিত উচ্চপর্যায়ের ‘লাইভওয়্যার’ প্রশিক্ষণে এই বড়ি দুটি ব্যবহার করা হয়। এর প্রতিক্রিয়া দেখে ভারতজুড়ে বাহিনীর ৫৪টি ঘাঁটিতে এই ওষুধ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের পাইলটরা এই ওষুধ খাওয়ার পর তাঁদের ওপর ওষুধের ভালো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। যুদ্ধের সময় যখন পাইলটদের সদা সতর্ক অবস্থায় থাকতে হয়, সে সময়ের জন্য এই ওষুধ ভীষণ কার্যকর বলে পরীক্ষা করে দেখা গেছে। বিমানবাহিনীর চিকিৎসকদের গবেষণায় এসব তথ্য পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতের বিমানবাহিনীর পাইলটদের ব্যক্তিগত কাজের ক্ষেত্রে এই দুটি ওষুধ দারুণ কাজ করে।
ওষুধ সেবন করেছেন- ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমন এক পাইলট জানান, শরীরের ভেতরে যখন ওষুধটি কাজ করতে শুরু করে তখন শরীর শিথিল হয়ে যায়। মনে কোনো দুশ্চিন্তা থাকে না। মন বিক্ষিপ্তও থাকে না।
যদি কোনো পাইলটের ঘুমের সমস্যা থাকে, তাহলে তাঁর কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে বিমান চালানোর সময়, বিশেষ করে যুদ্ধবিমান চালানোর সময় নানা রকম ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন তিনি।
এই গো বা নো-গো বড়ি সেবনের ফলে নেশা হয়ে যেতে পারে কি না বা স্বাস্থ্যের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে কি না, সে বিষয়ে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বড়ি প্রতিদিন সেবনের জন্য নয়। কেবল গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বা নির্দিষ্ট মিশনের সময় পাইলটদের এই পিল সেবনের অনুমতি দেওয়া হবে। আর সেটিও হবে কঠোর নজরদারির মধ্যে। তবে পরীক্ষামূলকভাবে গো বা নো-গো বড়ি সেবনের পর উল্লেখ করার মতো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।