চাকরি ছেড়ে কেন ট্যাক্সি ড্রাইভার হলেন ভারতের এই প্রকৌশলী

চুয়াত্তর বছর বয়স্ক মুম্বাইয়ের এক বাসিন্দা। ১১টি ভাষায় কথা বলতে পারা এই ব্যক্তির ছেলেমেয়েরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো পদে কর্মরত। তাঁর নিজেরও যোগ্যতাও কম নয়—একজন দক্ষ প্রকৌশলী তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর পেশা ট্যাক্সি চালানো। মুম্বাইয়ের ওই বাসিন্দা সম্পর্কে ফেসবুক পেজের এমন তথ্য কেমন গরমিল লাগে।
একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কেন ট্যাক্সি চালান ওই ব্যক্তি? হিউম্যানস অব বোম্বে নামক ফেসবুক পেজেই জানা যায় এর পেছনের কাহিনী। অনেক বছর আগে ‘লারসেন ও টার্বো’তে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। হঠাৎ একদিন রাতে তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কোনো যানবাহনই পাওয়া যাচ্ছিল না।
উল্লিখিত অভিজ্ঞতা মুম্বাইয়ের ওই ইঞ্জিনিয়ারের মনে দাগ কাটে। মনে মনে পরিকল্পনা করেন, নিজেই ট্যাক্সি ড্রাইভার হয়ে মানুষের সেবা করবেন। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৬৫ হাজার রুপি বেতনের ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি ট্যাক্সি ড্রাইভার বনে যান তিনি। তখন তাঁর আয় দাঁড়ায় মাত্র ১০ হাজার রুপি। ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেন তিনি। যাত্রীদের কাছে নিজের কার্ড বিলি করতে থাকেন এই ভদ্রলোক। যাত্রীদের কাছে জানান ভোর ৩টায়ও তাঁকে পাওয়া যায়। জরুরি প্রয়োজনে তিনি সব সময়ই ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসেন। জানা গেছে, জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো যাত্রীর কাছ থেকে ভাড়া নেন না মুম্বাইয়ের ওই ব্যক্তি।
ফেসবুকের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কয়েক দিন আগের এক ঘটনা ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করতে তাঁকে আরো উদ্বুদ্ধ করে। আগুনে পুড়ে যাওয়া এক নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ট্যাক্সি ডাকছিল কয়েক ব্যক্তি। তবে কয়েকটি ট্যাক্সি পাশ দিয়ে গেলেও ওই রোগীকে হাসপাতালে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই সময় তিনি এগিয়ে আসেন। একটি চাদর দিয়ে পুড়ে যাওয়া নারীকে মুড়িয়ে দ্রুত ট্যাক্সি করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন।
জানা গেছে, ২০০৫ সালের জুলাইয়ে বন্যা, ২৬/১১-এর হামলা সব সময়ই ওই ব্যক্তি জরুরি সেবা দিয়ে গেছেন। জরুরি প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে পেরেই খুশি তিনি।