নেতাজির গোপন ফাইল প্রকাশ করল ভারত

প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে অবশেষে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আনল ভারতের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তাঁর সম্পর্কিত ১০০টি গোপন ফাইলের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছে দেশটি।
আজ শনিবার সকালে ভারতের জাতীয় আর্কাইভে রাখা গোপন ফাইলগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর বসুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তখনই আলোচনায় আসে ফাইলগুলো প্রকাশ্যে আনার বিষয়টি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই নয়াদিল্লির ন্যাশনাল আর্কাইভ অব ইন্ডিয়ায় এই ফাইলগুলোর ডিজিটাল কপি উন্মোচন করেন মোদি। উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর পরিবারের ১২ জন সদস্য।
বর্তমানে ভারতের জাতীয় আর্কাইভে এই ফাইলগুলো রাখা আছে। ফলে সাধারণ মানুষ এবং তাঁর ভক্তরা এখানে অনলাইনেই এই তথ্যগুলো পড়তে পারবেন। অনেকের ধারণা, গোপন ফাইলগুলো প্রকাশের ফলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যুর অনেক গোপন রহস্যের সুরাহা হতে পারে।
আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে ফাইলগুলো সর্বসাধারণের দেখার জন্য দিল্লির ন্যাশানাল আর্কাইভে পাওয়া যাবে। সেখান থেকে আগ্রহীরা স্ক্যান করা কপিও সংগ্রহ করতে পারবেন। ওয়েবসাইটেও এই কপি ডাউনলোড করা যাবে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৬ সালে নেতাজি সংক্রান্ত আরো ৩৩টি গোপন ফাইল প্রকাশ্যে এনেছিল ভারত সরকার। তবে সেগুলোতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য ছিল না। তবে এবারের ফাইলগুলো অনেক বেশি তথ্যসমৃদ্ধ বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
তবে প্রাথমিকভাবে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, ওই সব ফাইলে উল্লেখ রয়েছে, সর্বভারতীয় কংগ্রেস একসময় নেতাজির মেয়েকে প্রতি মাসে ছয় হাজার রুপি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা নিতে চাননি নেতাজির স্ত্রী। বাকি রহস্য এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
উল্লেখ্য, প্রায় ৭০ বছর আগে রহস্যময়ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তারপর নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য সংক্রান্ত দুটি আলাদা কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইপেতে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর। তবে অনেকেই এই রিপোর্টের বিরোধিতা করেছিলেন।
নেতাজির মৃত্যু নিয়ে কোথাও বলা হয় রাশিয়ায় গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আবার কেউ কেউ বলেন, উত্তরপ্রদেশের ফইজাবাদে গুমনামি বাবা হয়ে ছিলেন নেতাজি। কিন্তু আসল সত্যিটা এবার এসব গোপন ফাইল থেকে উদ্ধার হয় কিনা সেটাই এখন দেখার।