‘মিনি হুকায়’ মজেছে কলকাতা

ধূমপান করবেন, কিন্তু শরীরে বেশি নিকোটিন প্রবেশ করবে না, ঠোঁটও কালো হবে না, এমনটা ভেবেছেন কখনো? যদি না ভেবে থাকেন, তবে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে কলকাতাসংলগ্ন শহরতলি নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা অশোক ভৌমিকের সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত।
চোখে না দেখলেও হুকা নাম শোনেননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আগের দিনে বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তিরা তামাক ভরে হুকা টানতেন। কিন্তু আধুনিক সমাজব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছে সেই হুকা, স্থান দখল করেছে সিগারেট। আর অশোক ভৌমিক এমন এক হুকার সঙ্গে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন, যেটা দিয়ে আদতে সিগারেটই পান করা হয়।
অশোক ভৌমিক জানান, বিশেষ ধরনের এ হুকার নাম ‘মিনি হুকা’। কাচের তৈরি এই হুকার ওপরের অংশে রয়েছে একটি পাইপ। যেখানে বসাতে হয় জ্বলন্ত সিগারেট। তারপর হুকার নিচের গোলাকার অংশে রাখতে হবে পানি। আর ওই পাত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা পাইপের মাধ্যমে অনায়াসে করা যাবে ধূমপান।
কলকাতায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ হুকা। তবে এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই ৬০ বছর বয়সী হুকা ব্যবসায়ী অশোক ভৌমিকের। তিনি বলেন, ‘সরকার যদি এই মিনি হুকাকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ধূমপানজনিত ক্ষতি থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে। মূলত শরীরে নিকোটিনের প্রভাব কমানোর ক্ষেত্রে এই মিনি হুকার ভূমিকা বেশ। কারণ সিগারেটের পেছনে ফিল্টার লাগানো থাকে, আর এ হুকার মাধ্যমে সিগারেট পান করলে পানির মাধ্যমেও তা আবার ফিল্টার হয়। ফলে ধূমপানজনিত ক্ষতি অনেকখানি কমে যায়।’
অশোক ভৌমিক জানান, তার বাবা এই মিনি হুকা তৈরি করে বিক্রি করতেন। তিনি ১৯৮৪ সালে আইটিআই পাস করেন। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও চাকরি না পেয়ে জীবিকার টানে বাবার পেশাই বেছে নেন তিনি। শুরু করেন হুকা তৈরি ও বিক্রি। কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে এই হুকা বিক্রি করেন তিনি।
একটি মিনি হুকা তৈরি করতে খরচ হয় ২২ রুপি, যা বাজারে বিক্রি হয় ৪০ রুপিতে। আর একটু বড় সাইজের হুকা বিক্রি হয় ৬০ রুপি পর্যন্ত। এই হুকা বিক্রি করেই প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার রুপি উপার্জন করেন তিনি।