২০ দেশের কূটনীতিকরা দেখলেন পোড়া রাখাইন

মিয়ানমারের পোড়া গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনীর সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য দেখেছেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারে কর্মরত ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা। এক যুক্ত বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন তাঁরা। এই ২০টি দেশের মধ্যে অধিকাংশই পশ্চিমা দেশ।
গতকাল সোমবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সরকারের সহযোগিতায় সফর করেন ২০ দেশের কূটনীতিকরা। এরপর সেখানে যা দেখে এসেছেন, সে সম্পর্কে এক যুক্ত বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে কূটনীতিকরা বলেন, তাঁরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পরিদর্শনকালে দেখেছেন যে তাদের বাড়িঘর পুড়ে ছাই। বসতবাড়ির বাসিন্দারা অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে এবং তারা সেনাবাহিনীর সহিংসতায় ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য দেখেছেন।
বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যে ২০টি দেশের কূটনীতিকরা বিবৃতি দিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, স্পেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড।
কূটনীতিকরা বলেন, ‘আমরা দেখেছি গ্রামগুলো পুড়ে গেছে এবং সেখানে কোনো মানুষজন নেই... সেখানকার সহিংসতা অবশ্যই থামাতে হবে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা ওই সফরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখেছি এবং আমরা আরেকবার আহ্বান জানাচ্ছি সেখানে যেন মানুষ নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারে। পাশাপাশি ওই রাজ্যে জীবনরক্ষাকারী সেবা পৌঁছাতে হবে এবং অন্য রাজ্যের সঙ্গে কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না।’
সন্ত্রাসের অভিযোগে রাখাইনের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সেদেশের সেনাবাহিনীর বিশ্বের নৃশংসতম সহিংসতা ঘটনার পাঁচ সপ্তাহ পর সেখানে বিদেশি কূটনীতিকদের এই সফর ও বিবৃতি প্রকাশিত হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর উচিত কোনো প্রকার বৈষম্য না করে রাখাইন রাজ্যের সব মানুষের জানমাল রক্ষা করা। কূটনীতিকরা বলেন, এই সহিংসতার বিষযে উচ্চপর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা তদন্ত হওয়া উচিত এবং তাদের এই পরিদর্শন ‘কোনো তদন্ত মিশন ছিল না’।
কূটনীতিকরা ‘ইউএন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’কে রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, ‘আরসা ২৫ আগস্ট যে হামলা করেছিল, সে জন্য আমরা আবার নিন্দা জানাই। তবে এ জন্য যে সহিংসতা ও ব্যাপক সংখ্যক মানুষের দেশত্যাগ ঘটেছে, তার জন্য গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’