‘কীভাবে নামাজ পড়তে হয়’ জানে না আইএস জঙ্গিরা

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চলছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) তাণ্ডব। ইসলাম রক্ষার ধোয়া তুলে ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে ঘাঁটি গাঁড়ে আইএস। আরব দেশগুলোসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিম তরুণরা যোগ দিতে থাকে জঙ্গি সংগঠনটিতে। ইসলামের নামে চালিয়ে যেতে থাকে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা ওই তরুণদের নিয়ে অবাক করার মতো তথ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের কাউন্টার টেরোরিজম শাখার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আইএসের যোদ্ধাদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান খুব সীমিত। জিহাদের প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে তাদের ধারণাই নেই। এ ছাড়া কীভাবে নামাজ পড়তে হয় তার সঠিক জ্ঞানও নেই অনেক জঙ্গির।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আইএস জঙ্গিরা ইসলামকে ন্যায়বিচার ও অবিচারের দৃষ্টিতে দেখে, আধ্যাত্মিকতার দৃষ্টিতে নয়। এ ছাড়া আর্থিকভাবে ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিরাই মূলত আইএসে যোগ দিয়েছে।
১২টি দেশের ৪৩ জন সিরিয়া ফেরত আইএস সদস্যের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করে জাতিসংঘের কাউন্টার টেরোরিজম শাখা।
এ বিষয়ে ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হামেদ এল-সাইদ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ব্যারেট জানান, আর্থিক ও রাজনৈতিক কারণে সমাজ থেকে বিতাড়িত তরুণরাই মূলত যোগ দিয়েছে আইএসে। পারিবারিক সমস্যা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকাও এর অন্যতম কারণ।
এই দুই বিশেষজ্ঞ আরো জানান, তরুণদের কাছে ধর্মীয় বিশ্বাসের থেকে উচ্চ বেতন, বাড়ি ও স্ত্রীর লোভই আইএসে যোগদানের মূল কারণ।
২০১৪ সালে ইরাক ও সিরিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে ঘাটি গেঁড়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় আইএস। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা। তবে সম্প্রতি ইরাকি বাহিনীর হামলার মুখে দেশটির মসুল শহর ছাড়তে বাধ্য হয় আইএস সদস্যরা। তবে জঙ্গি সংগঠনটির অন্যতম ঘাঁটি সিরিয়ার রাকা শহর এখনো নিজেদের দখলে রেখেছে আইএস।