কলকাতার রাজপথে সাঁতার কাটছে শিশুরা!

টানা বৃষ্টিতে নাজেহাল কলকাতাবাসী। বৃহস্পতিবার রাতভর বৃষ্টিতে পানি জমেছে কলকাতাসহ শহরতলির বিভিন্ন স্থানে। কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও বা কোমরপানি জমেছে রাস্তার ওপর।
কলকাতার উল্টোডাঙ্গা, আর্মহাস্ট স্ট্রিট, যাদবপুর, বেহালা, বালিগঞ্জ, রাসবিহারী, ল্যান্সডাউন, যোধপুর পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় পানি জমে নদীর চেহারা নিয়েছে। পানি জমে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, সেন্ট্রাল এভিনিউ, পামার বাজার এলাকায়ও। একই অবস্থা শহরতলির বিভিন্ন স্থানে এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।
কলকাতা ও শহরতলির একাধিক রাস্তায় নৌকা নামানো হয়েছে। যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ভ্যানে করে পানিমগ্ন রাস্তা পারাপার চলছে। পানিমগ্ন রাস্তা পার করে দেওয়ার জন্য যাত্রীপিছু মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন ভ্যানচালকরাও। কলকাতাসংলগ্ন ভিআইপি, রাজারহাট-নিউটাউনসহ এয়ারপোর্টের বিভিন্ন রাস্তায় সকাল থেকে সাঁতার কাটা শুরু করে দেয় শিশুরা। অনেককে রাজপথে জাল ফেলতেও দেখা যায়।
একটানা প্রায় সাত দিন কখনও টিপটিপ, কখনও ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শহর কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ১২২ দশমিক ৫ মিলিমিটার। আজো কোথাও ভারি এবং কোথাও হালকা বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে এই বৃষ্টিপাত। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টির পানিতে ভেসে কলকাতার বিধান সরণি এলাকায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে একটানা বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় কলকাতার বিভিন্ন স্থানে রাস্তার ওপর গাছ উপড়ে পড়ে। লাইনের ওপর গাছ পড়ে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয় মেট্রোরেল পরিষেবাও। দমদম নোয়াপাড়া মেট্রোস্টেশনের কাছে লাইনে গাছ পড়ে থাকায় শুক্রবার সকাল থেকে মেট্রোপথে ভোগান্তিতে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। একই সঙ্গে বৃষ্টির জেরে ব্যাহত হয় শিয়ালদহ মেন ও দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচলও। ব্যারাকপুরের টিটাগড় রেলস্টেশনের কাছে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানি জমেছে। শিয়ালদহ বিভিন্ন শাখায় ট্রেন চলছে শম্বুকগতিতে। ফলে শুক্রবার সকালে কাজে বেরিয়ে পথেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ।
তবে শহরে পানি জমার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কলকাতায় পানি জমার যে ছবি দেখানো হচ্ছে, তা বৃষ্টি হওয়ার মুহূর্তের ছবি। বৃষ্টি চলাকালে পানি জমবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই পানি এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই নেমে যাচ্ছে।