ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্তে হিলারির প্রভাব ছিল কি না, তদন্তে মার্কিন সিনেট

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চালানো একটি তদন্ত ঠেকাতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন তাঁর ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এর সঙ্গে জড়িত ছিল না তা জানতে চেয়ে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স ডব্লিউ টিলারসনকে চিঠি দিয়েছেন সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান চাক গ্রাসলি।
চিঠিতে গ্রাসলি বলেন, ২০১৬ সালের আগস্টে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে লেখা চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থে সরাসরি প্রভাব ফেলে এমন কোনো বিষয়ে সম্পৃক্ততা হতে নির্বাহী বিভাগের কর্মীদের অযোগ্য ঘোষণা করে একটি আইন দরকার।
‘আবার মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের কর্মকাণ্ডে যৌক্তিক সন্দেহ জেগেছে যে, তিনি এই নিয়মগুলো ভঙ্গ করেছেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সততার ওপর জনগণের আস্থাকে হেয় করেছেন’, বলেন গ্রাসলি।
গ্রাসলি লিখেছেন, ইমেইল বার্তায় দেখা গেছে, হিলারি ক্লিনটন এবং তাঁর ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তাঁর ব্যাংকের কার্যালয় থেকে সরানোর বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শুধু তাই নয়, সে সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ড. ইউনূসের বিষয়ে তদন্ত বন্ধ করার বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রসঙ্গ টেনে গ্রাসলি লিখেছেন, জয় বলেছেন, বিষয়টির তদন্ত বন্ধ করতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিভিন্ন সময়ে চাপ দেওয়া হয়েছে।
‘শুধু ক্ষমতার জোরে একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও আর্থিক সম্পর্কের জন্য একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌম সরকারের তদন্তে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যক্তিগত ব্যবসা বা কাজের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব মিলিয়ে ফেলা মোটেও যুক্তিযুক্ত কাজ নয়’, রেক্স ডব্লিউ টিলারসনকে লেখেন গ্রাসলি।
চিঠিতে আরো বলা হয়, আইনি বৈধতার প্রশ্নে ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে দেয় সরকার। সে সময় ড. ইউনূসের সঙ্গে ক্লিনটন ফাউন্ডেশন, হিলারি ক্লিনটন এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের বেশ কিছু ইমেইল আদানপ্রদান হয়।
এসব ইমেইলও নিজের চিঠির সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন চাক গ্রাসলি। তিনি বলেন, ২০১০ থেকে ২০১২-এর মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেন। প্রতি বৈঠকেই ড. ইউনূস প্রসঙ্গ উঠে আসত এবং তাঁর বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত বন্ধ করতে জয়কে চাপ দেওয়া হতো। যাঁরা জয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টি, ড্যান ডব্লিউ মোজীনা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন জন ড্যানিলোভিচ, ইউএস এআইডির প্রশাসক রাজীব শাহ।