শান্তিচুক্তির ৭২ ঘণ্টা না কাটতেই আফগানিস্তানে আক্রমণ তালেবানের

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তির পর ৭২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ‘আংশিক যুদ্ধবিরতি’ লঙ্ঘন করল তালেবান।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে আফগানিস্তানের দক্ষিণআঞ্চলীয় কান্দাহার প্রদেশের কমপক্ষে দুটি জেলায় গতকাল সোমবার আক্রমণ চালায় তালেবান। ওই অঞ্চলকে এখনো তালেবানদের দুর্গ হিসেবে গণ্য করা হয়। স্থানীয় পুলিশ প্রধান সুলতান মোহাম্মদ হাকিমি বলেন, ‘পাঞ্জওয়াহি ও মাইওয়ান্দে আমাদের পাঁচটি পোস্টে হামলা চালিয়েছে ওরা (তালেবান)।’
যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তি অনুযায়ী, সাময়িকভাবে সহিংসতা কমানোর বিষয়ে একমত হয় দুই পক্ষই। এ ছাড়া মার্কিন, তালেবান ও আফগান বাহিনীর মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা হবে বলে চুক্তিতে নির্ধারিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সপ্তাহেও সংঘাত কমানোর (রিডাকশন ইন ভায়োলেন্স) নীতি মেনে চলেছিল তালেবান। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের পরই নিজেদের আগের অবস্থানে ফিরে গেছে তারা। আফগান সেনা ও পুলিশের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশে দিয়েছে চরমপন্থী ইসলামী সংগঠনটি। সে সংক্রান্ত নথিও হাতে পেয়েছে এএফপি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘সহিংসতা কমানোর (পর্ব) শেষ হয়ে গেছে। আগের মতোই অভিযান চলবে। (যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান) চুক্তি অনুযায়ী আমাদের যোদ্ধারা কোনো বিদেশি বাহিনীকে আক্রমণ করবে না। তবে আফগানিস্তানের প্রশাসনিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
শুধু কান্দাহার নয়, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাদঘিস প্রদেশেও তালেবান হামলা চালিয়েছে বলে জানান আফগান সেনা বাহিনীর এক কমান্ডার। ওই হামলায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। পূর্ব আফগানিস্তানের খোস্তের একটি ফুটবল মাঠে গতকাল সোমবার বিকেলে বোমা বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তালেবান অবশ্য জানিয়েছে, ওই ঘটনায় তাদের হাত নেই।
গত রোববার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি জানান, তাঁদের সঙ্গে তালেবানের আলোচনা শুরু না হওয়া পর্যন্ত আংশিক যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে কাবুল। আগামী ১০ মার্চ সে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। যদিও চুক্তিতে তালেবান বন্দি প্রত্যর্পণের অংশটি অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষুব্ধ হয় তালেবান। গতকাল সোমবার তালেবানের মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দেন, আফগান প্রশাসন যদি পাঁচ হাজার তালেবান বন্দীকে না ছাড়ে, তাহলে কোনো আলোচনায় বসা হবে না।
তবে তালেবানের এই পদক্ষেপে অবাক নয় ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আফগানিস্তানে একাধিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় আছে। এখনই (সহিংসতা) শূন্যের কোঠায় নেমে যাবে, সেটা হয়তো হবে না।’