ফ্লিপ ফোন আনল এলজি!

শিরোনাম শুনে রীতিমতো চমকে উঠেছেন নিশ্চয়ই! যেখানে টেক জায়ান্টরা কার চেয়ে কে কত বড় স্ক্রিনের ফোন তৈরি করতে পারে, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি লাগিয়ে দিয়েছে, সেখানে এলজির মতো একটা কোম্পানি কিনা বাজারে আনছে সেই পুরোনো দিনের ‘ফ্লিপ ফোন!’
শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনা সত্যি। ফ্লিপ ফোনের যুগগত দশকেই শেষ হয়ে গিয়েছে বলে সবার ধারণা ছিল। পারতপক্ষে গাঁটের পয়সা খরচ করে প্রায় ‘প্রস্তর’ আমলের এই সেট হাতে নিতে চাইবে না কেউ। কিন্তু সব প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলজি নিয়ে এসেছে ফ্লিপ ফোন।
এলজি বাজারে আনছে ‘জেন্টেল’ নামের একটি ফ্লিপ হ্যান্ডসেট, যেটি চলবে সর্বশেষ অ্যানড্রয়েড ৫.১ ললিপপ অপারেটিং সিস্টেমে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল।
গত দশকে স্টাইলিশ হ্যান্ডসেটগুলোর মধ্যে ফ্লিপ ফোন ছিল অন্যতম। কিন্তু টাচস্ক্রিনের স্মার্টফোনগুলো বাজারে ব্যাপকভাবে রাজত্ব করা শুরু করলে এক সময়ের এই বিখ্যাত ফ্যাশন প্রায় আস্তাকুঁড়ে চলে যায়। কারণ বড় টাচ স্ক্রিনের সেটগুলো যেমনি ব্যবহার করা সহজ, তেমনি আছে ইন্টারনেট পুরোপুরি ব্যবহার করার সুবিধা। তা ছাড়া উন্নতমানের ক্যামেরা এবং বিভিন্ন অ্যাপ তো আছেই। আর বড় স্ক্রিনে ভিডিও দেখে আর ফেসবুক ব্যবহার করার মনো আনন্দ আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়।
তাই বলে সবাই কিন্তু এমনটাই যে ভাবে, তা কিন্তু নয়! একদল মানুষ আছেন যাঁরা মনে করেন মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো অতিরিক্ত বড় হয়ে যাচ্ছে আকারে। এত বড় সেট যেমনি হাত দিয়ে ধরে রাখা কষ্টকর, তেমনি পকেটে রাখাটাও ঝামেলাপূর্ণ মনে হয় তাঁদের কাছে।
মনে হচ্ছে সেই সমস্ত ক্রেতাদের আকর্ষণ করতেই এই সেটের আগমন। কারণ ফ্লিপ সেটটি আকারে প্রায় ঐতিহ্যগতভাবেই ছোট! বাড়তি সুবিধা বলতে এতে খালি একটি ভালো অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। তবে আশা করা যায়, এটি বয়স্ক মানুষ এবং শিশুদের ব্যবহারের জন্য বেশ উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। কারণ মাঝে মাঝে টাচস্ক্রিন চালাতে প্রায়ই তাদের বেগ পেতে হয়। আর ফ্লিপ সেট বলে এর স্ক্রিনটিও থাকবে সুরক্ষিত।
ফোর জি এলটিই সহ সেটটিতে আরো আছে ৩.২ ইঞ্চি ডিসপ্লে, সঙ্গে ৪৮০X৩২০ রেজ্যুলেশন, ১.১ গিগাহার্টজ কোয়াড কোর প্রসেসর, ১ জিবি র্যাম, ৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা এবং ৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। তবে মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করে জায়গা বাড়ানো যাবে। বর্তমান টেক বাজার বিবেচনা করলে বলা যায় সেটটি একেবারেই সেকেলে!
তবে ভালো দিকের মধ্যে আছে সেটটির প্রসেসর। আর অ্যানড্রয়েডের প্রায় সব অ্যাপই চলবে, যদিও খুব সীমিতভাবে। আর আছে ১ হাজার ৭০০ এমএএইচের ব্যাটারি। এতে একবার চার্জ দিলে সেটটি সারা দিন চালানো যাবে। কারণ এই সেটে অনেক পিক্সেলের ভিডিও দেখা আর থ্রিডি গেইম খেলার মতো বিলাসিতা কেউ দেখাতে পারবে না। তাই ব্যাটারির জীবনকাল বিবেচনা করলেও সেটটি বাহ্বা পেতে পারে।
সেটটির প্রায় সবকিছু সেকেলে হলেও দাম কিন্তু মোটেও কম নয়। কোরিয়াতে জেন্টেল ফ্লিপ সেটটির দাম প্রায় ১৭১ ডলার! সারা বিশ্বে মানুষের রুচির আমুল পরিবর্তন না ঘটলে এই সেট এশিয়ার বাইরে কোথাও বিক্রিবাট্টা হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু আশার বাণী শোনাচ্ছে জাপান। কারণ গত ৭ বছরের মধ্যে এই বছরেই সেখানে সর্বোচ্চসংখ্যক ফ্লিপ হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছে।