ফ্রান্সে সবুজ ছাদ আইন

বিশ্বের শিল্প-সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল ফ্রান্স এবার সাজবে সবুজে। দেশটির অনেক ভবনের ছাদে গাছপালা লাগানোর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এটি বাস্তবায়ন হলে আকাশ থেকে ফ্রান্সের অনেক শহর দেখাবে সবুজ বনের মতো। আর বাগানের বদলে থাকতে পারে সোলার প্যানেল।
সম্প্রতি ফ্রান্সে একটি আইন পাস হয়েছে যা ‘সবুজ ছাদ আইন’ নামে পরিচিতি পাচ্ছে। এই আইন অনুযায়ী বাণিজ্যিক অঞ্চলের প্রতিটি নতুন ভবনের ছাদে গাছপালা লাগাতে হবে অথবা সোলার প্যানেল (সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা) লাগাতে হবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবুজ ছাদ আইন বাস্তবায়ন হলে এর প্রভাবে শীত ও গ্রীষ্ম দুই ঋতুতেই কোনো ভবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় বিদ্যুৎ খরচ কমে যাবে। এ ছাড়া পানিস্বল্পতার সমস্যা কাটাতেও এটি কার্যকর হবে। আর পাখিকুলও পাবে শহরে বসবাসের আবাস।
ফরাসি পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সবুজ ছাদ আইনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলেছিল। সব নতুন ভবনের ছাদেই গাছপালা লাগানোর আইনের দাবি ছিল তাদের। তবে নতুন আইনে শুধু নতুন বাণিজ্যিক ভবনের কথা বলা হয়েছে। তবে এতেও আংশিক বিজয় হয়েছে বলে মনে করে ফ্রান্সের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। ফ্রান্সের অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করে নতুন আইনের নবায়নযোগ্য শক্তির বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
ভবনের ছাদে গাছ লাগানো জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিশ্বের অনেক স্থানেই বেশ জনপ্রিয়। কানাডার টরোন্টো শহরে ২০০৯ সালে সবুজ ছাদ আইন পাস হয়, যা দ্বারা প্রতিটি নতুন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে গাছপালা লাগাতে বাধ্য করা হয়।
ফ্রান্সের সবুজ ছাদ আইন উত্তর আমেরিকার দেশগুলোসহ বিশ্বের সব দেশের শহরের জন্যই অনুসরণ করতে পারে।
‘সবুজ ছাদ’ শহরে ফিরিয়ে আনে প্রকৃতি
ছাদে গাছপালা লাগানোয় একদিকে ভবনের সৌন্দর্য বাড়ে আবার রুচিলতার প্রকাশ ঘটে। এতে ভবনের অর্থনৈতিক গুরুত্বও বাড়ে।
নবায়নযোগ্য বস্তু ব্যবহারের ফলে ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও বায়ুপ্রবাহ ব্যবস্থায় ব্যয় কমানো যায়।
শহরে গাছপালা কমে যাওয়ার কারণে পরিবেশে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, ভবনের ওপর গাছপালা লাগানোয় তা কমে আসে। শহরেও প্রকৃতির পানিচক্র স্বাভাবিক থাকে।
ভবনের ওপরের গাছপালা শহরের পরিবেশের দূষণও কমিয়ে আনে। একই সঙ্গে প্রকৃতির নাইট্রোজেন চক্রও অব্যাহত থাকে।
ভবনের ছাদের গাছপালা শহরের মানুষকে প্রকৃতির কাছে থাকার সুযোগ করে দেয়। ব্যস্ত সময় শেষে শহরের মানুষ সময় কাটানোরও একটি সুন্দর পরিবেশ পায়।