এশিয়ার মঞ্চে শনিবার আরেকটি বাংলা-লঙ্কা দ্বৈরথ

মুশফিকুর রহিমের সেই নাগীন ড্যান্স কিংবা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের টাইমড-আউট কাণ্ড—এশিয়ার ক্রিকেটে নতুন মাত্রা দিয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে। ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ ছাপিয়ে আলোচনার টেবিলে বেশ ভালো রকম জায়গা করে নিয়েছে টাইগার-লায়নদের লড়াই। মঞ্চটা যদি কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টের হয়, তাহলে সেই মাত্রা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।
এমন অবস্থায় আগামীকাল শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করবে নাগরিক টিভি ও টি-স্পোর্টস। অনলাইনে দেখা যাবে ট্যাপম্যাড ও টফি অ্যাপে।
এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সুপার ফোরের লড়াইয়ে অবস্থান পাকা করার লক্ষ্য বাংলাদেশের সামনে। অন্যদিকে, এই ম্যাচ দিয়েই এশিয়া কাপের মিশন শুরু করবে শ্রীলঙ্কা। জয় দিয়ে টুর্নামেন্টের শুরু করতে চায় লঙ্কানরাও।
বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যপূরণ যে সহজ হবে না, দুই দলের পরিসংখ্যান সেটাই বলছে। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার দ্বৈরথ সাম্প্রতিক সময়ে বাইজ গজে উত্তাপ ছড়ালেও সামগ্রিকভাবে লঙ্কানরা বেশ এগিয়ে টাইগারদের চেয়ে। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে ২০ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। যেখানে লঙ্কানদের জয় ১২টি ম্যাচে। বিপরীতে, বাংলাদেশ জিতেছে ৮টি ম্যাচ।
তবে পরিসংখ্যান আসলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। নিজেদের দিনে যেকোনো দলই শক্তিশালী। ক’দিন আগেও সেটা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে তাদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে এসেছে। এই ম্যাচে সেই আত্মবিশ্বাস বেশ কাজে দেবে টাইগারদের।
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে টাইগার পেসার তানজিম হাসান সাকিবও সেটাই বলেছেন। সেই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের। তানজিম বলেন, ‘আমাদের অ্যাপ্রোচ একবারে সোজাসাপ্টা, আমার জেতার জন্যই মাঠে যাব। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা সিরিজ জিতেছি, এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামব। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলব।’
জয়ের জন্য ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং, তিন বিভাগেই জ্বলে উঠতে হবে বাংলাদেশকে। আগের ম্যাচগুলোর মতোই দায়িত্ব নিতে হবে দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আর তানজিদ হাসান তামিমকে। বোলিংয়ে লঙ্কানদের হুমকি জানাতে হবে পেসার মুস্তিাফিজুর রহমান-তানজিম সাকিব কিংবা স্পিনার শেখ মেহেদি-রিশাদ হোসাইনদের।
তবে এশিয়া কাপে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাও। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও, ঐ সিরিজে আমাদের পারফরম্যান্স ভাল ছিল। এছাড়া জিম্বাবুয়ের মাটিতেও আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। তাই সর্বশেষ দুই সিরিজের পারফরম্যান্স আমাদের এশিয়া কাপে সহায়ক হবে।’
এশিয়া কাপের পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘বি’ গ্রুপকে ধরা যায় গ্রুপ অব ডেথ হিসেবে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের সঙ্গে চতুর্থ দল হংকং। হংকংকে বাদ দিলে তিনটি দলই এশিয়া কাপের সুপার ফোর খেলার মতো শক্তিশালী। সেই বিচেনায় এই ম্যাচটি দুই দলের জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পরিবর্তন আসতে পারে বাংলাদেশের একাদশে। আগের ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে উইকেটে পুরোটা সময় হাঁসফাঁস করতে দেখা গেছে তাওহিদ হৃদয়কে। বিশেষ করে অফসাইডে তার ব্যাটিং দুর্বলতা বেশ ফুটে উঠেছিল। যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত খেলেছেন। কিন্তু স্ট্রাইকরেট নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। তার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেতে পারেন সাইফ হাসান।
বোলিং বিভাগেও কাটাছেড়া করতে পারেন টিম ম্যানেজমেন্ট। হংকংয়ের বিপক্ষে পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিংও আশানুরূপ ছিল না। দলের সবচেয়ে খরুচে বোলার ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপেক্ষ তার পরিবর্তে শরিফুল ইসলাম কিংবা সাইফউদ্দিনকে সুযোগ দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।