আর্জেন্টিনায় শেষ ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ নিয়ে দুঃসংবাদ দিলেন মেসি

ফুটবলের জাদুকরের শেষের শুরুটা হলো ঘরের মাঠে। লিওনেল মেসি দেশের মাটিতে বিদায়ের অধ্যায়টা রাঙালেন জোড়া গোল করে। দলকে জয় উপহার দেওয়ার রাতটাও তার জন্য বিশেষ। স্টেডিয়ামজুড়ে পুরো সময় তার নাম ধ্বনিত হতে থেকেছে, গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছে পরিবার। খেলা শেষে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি কথায় উঠে এসেছে এভাবে শেষ করতে পারা তার স্বপ্ন ছিল।
সামনে ২০২৬ বিশ্বকাপ। তবে খেলবেন কি না, সেটা এখনো জানেন না মেসি। বিশ্বকাপ নিয়ে শোনালেন তার ভাবনা মিশ্রিত—আশা ও অনিশ্চয়তার এক গল্প। বিশ্বকাপ খেলার প্রসঙ্গে মেসি জানিয়েছেন, ‘দেখা যাক’।
বুয়েন্স এইরেসের এস্তাদিও মনুমোন্তলে লিওনেল মেসি বাংলাদেশ সময় আজ শুক্ক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ দেশের মাঠে খেলেছেন তার শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা। মেসি করেন জোড়া গোল, বাকি একটি একটি করেন লওতারো মার্টিনেজ।
ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত মেসি বলেন, ‘অনুভূতি অনেক, এই মাঠে আমি অনেক কিছু অনুভব করেছি। আমাদের মানুষদের সঙ্গে, নিজেদের দেশে খেলা সব সময়ই আনন্দের। আমরা বহু বছর ধরে একসঙ্গে খেলে উপভোগ করেছি। আমি খুব খুশি; আজকে এভাবে শেষ করতে পারাটা আমার সব সময়ের স্বপ্ন ছিল।’
এরপর মেসি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে অনেক কিছুই বলা হয়েছে। কিন্তু আমি সব ভালো স্মৃতি নিয়েই থাকব। এই দলটা যা কিছু ভালো করার চেষ্টা করেছে, তার সবকিছুই, সুন্দর এক সময় পার করেছি আমরা। আজ ছিল পয়েন্টের জন্য (প্রতিযোগিতামূলক) শেষ ম্যাচ।
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি না—এ নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলেননি মেসি। বয়স ও শরীরের অবস্থার কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে চান আট বারের ব্যাল ডি’অরজয়ী এই তারকা।
মেসি বলেন, ‘আগেও যেমন বলেছি, আমার মনে হয় না আরেকটা বিশ্বকাপ খেলতে পারব। বয়সের কথা ভাবলে সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত বিষয় হলো, আমি সেটা পারব না। তবে আমরা প্রায় পৌঁছে গিয়েছি, তাই আমি রোমাঞ্চিত এবং অনুপ্রাণিত। সব সময়ই বলি, আমি দিন ধরে ধরে চলি—শরীর কেমন লাগে, সেটাই আসল।’
মেসি আরও বলেন, ‘আমি চেষ্টা করি ভালোভাবে থাকতে, আর সবচেয়ে বড় কথা, নিজের সঙ্গে সৎ থাকতে চাই। যখন ভালো লাগে, খেলাটা উপভোগ করি। কিন্তু যখন ভালো না লাগে, তখন সত্যি বলতে ভালো সময় কাটে না—তাই সে অবস্থায় থাকতে পছন্দ করি না। তাই দেখা যাক কী হয়। এখনো বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’
বিশ্বকাপের এখনো অনেকটা সময় বাকি। এই সময়ে নিজের অবস্থা বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে চান মেসি। তিনি বলেন, ‘আমি এই মৌসুমটা শেষ করব, তারপর প্রি-সিজন হবে, তখন ছয় মাস সময় থাকবে। দেখা যাক তখন কেমন অনুভব করি। আশা করছি, ২০২৬ সালে ভালো একটি প্রি-সিজন কাটবে এবং এমএলএস মৌসুমটাও ভালোভাবে শেষ করব। এরপরই সিদ্ধান্ত নেব।’
২০০৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেক হয় মেসির। এরপর থেকে সময়ের ব্যবধানে হয়ে উঠেছেন আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় তারকা। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোল ও ম্যাচ খেলার রেকর্ড তার দখলে। ২০১৪ ও ২০২২ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তোলেন। শেষবার কাতারে তিনি জেতেন বিশ্বকাপ ট্রফি।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ খেলাটা নিশ্চিত হয়েছে সবার আগে। শেষ ম্যাচটি তাই নিয়মরক্ষার। ইকুয়েডরের বিপক্ষে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে মেসি খেলছেন না, ম্যাচ শেষে এমনটিই জানিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।