লর্ডস টেস্টে বল নিয়ে ভারতের অসন্তোষ

লর্ডসে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ডিউক বল। গতকাল (১১ জুলাই) টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে পরিবর্তিত বল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারত। মাত্র ১০.৩ ওভারেই দ্বিতীয় নতুন বলের আকার নষ্ট হয়ে যায়।
এইদিন দ্বিতীয়বার নতুন বল দেওয়া হলে প্রথম ১৪ বলেই ভারতীয় পেসার জাশপ্রিত বুমরাহ তুলে নেন ৩ উইকেট। কিন্তু এরপর ৪৮ বলেও আর কোনো উইকেটের দেখা পায়নি ভারত। ৭ ও ৯ নম্বরে নামা ব্যাটসম্যান জুটি গড়ে ফেলেন, পুরো সেশনেই কোন উইকেটের দেখা পায়নি ভারত।
দ্রুত বল নরম হয়ে যাওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করেছে ভারতীয় দল। কারণ ঘন ঘন বল পরিবর্তন করা হলেও বলের কার্যকারিতা দ্রুতই কমে আসছিল। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরোনো বলটি গড়ে ১.৮৬৯ ডিগ্রি সুইং ও ০.৫৭৯ ডিগ্রি সিম মুভমেন্ট করছিল। কিন্তু বদলি হিসেবে আনা বলে সুইং হয়েছে ০.৮৫৫ ডিগ্রি, তবে সিম অবশ্য একটু বেশি ছিল ০.৫৯৪ ডিগ্রি।
মাত্র ১০.৩ ওভারেই দ্বিতীয় নতুন বলের আকার পরিবর্তন হলে বিষয়টি নিয়ে মাঠেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভারতের অধিনায়ক শুবমান গিল। তার পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেকরাও।
সুনীল গাভাস্কার এই ম্যাচে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন। ক্ষোভ থেকেই তিনি বলেন, ‘এখান থেকে দাঁড়িয়েই দেখা যাচ্ছে, এটা কোনো ১০ ওভার বয়সী বল নয়, এটা অন্তত ২০ ওভার খেলা বলের মতো দেখা যাচ্ছে। এমন ঘটনা যদি ভারতে ঘটতো...যদি দেখা যেত পরিবর্তিত বল আগেরটার মতো না, তাহলে ব্রিটিশ মিডিয়ায় ব্যাপারটা নিয়ে অনেক কথা হতে দেখা যেতো।’
ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড এক্সে লিখেছেন, ‘আমরা এখন বল নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। প্রায় প্রতিটি ইনিংসেই বল বদলাতে হচ্ছে যা বড় একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। মনে হচ্ছে, এ সমস্যা পাঁচ বছর ধরে চলছে। ডিউকের সত্যিই একটা সমস্যা আছে, ওদের এটা ঠিক করা উচিত। ১০ ওভার নয়, একটা বল ৮০ ওভার টিকে থাকার কথা।’
স্কাই স্পোর্টসে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এবং জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন বলেছেন, ‘প্রথমত, ডিউক বল নিয়ে সমস্যাটা গুরুতর, ম্যাচ শুরুর আগেই দুই দলের অধিনায়ক বিষয়টা তুলেছিলেন। এ ম্যাচেও এই সেশনেই বল দুবার বদলানো হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, ডিউক বল খুব তাড়াতাড়ি আকার হারাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি, এখন খুব সহজেই আমরা বল বদলে ফেলি। বল পুরোনো হওয়া বা নরম হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমার মনে হয় ৮০ ওভার অবধি একই রকম থাকবে এমন একটা বল চাইছি আমরা।’
ইংল্যান্ডের সাবেক এই তারকা আরও বলেন, ‘ভারত প্রথম ঘণ্টায় যখন বল করছিল, তখন বুমরাহ ছিল অপ্রতিরোধ্য....আমি তখন স্কাইয়ের কমেন্ট্রি বক্সের পেছনে ল্যাপটপে কাজ করছিলাম। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি, বল পরিবর্তন করা হচ্ছে। তখন মনে হলো যে, বলটা দিয়ে এত ভালো বোলিং হচ্ছে, সেটা রেখে একটা বাক্স থেকে নতুন আরেকটা বল নেওয়ার দরকার কী?’