২৪৭ রানে অলআউট বাংলাদেশ

কলম্বো টেস্টে বাংলাদেশের চিত্রটা ছিল গল টেস্টের বিপরীত। ব্যর্থ হয়ে একের পর এক ফিরে গেছেন, তাদের পুরানো রূপটাই দেখিয়ে এলেন আরও একবার। শান্ত-মুশফিকদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা দেখা গেল না। টাইগারদের সাফল্যটা হঠাৎই ধরা দেয়, আর তাদের নিয়ে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসটাও ক্ষণিকেই মিলিয়ে যায়।
৮০তম ওভারে সোনাল দিনুশার বলে দিনেশ চান্দিমালের হাতে ক্যাচ দিয়ে তাইজুল ফিরে গেলে ২৪৭ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ৬০ বলে ৩৩ রান করে ফিরেছেন তাইজুল। দলের বিপদে তাইজুল যেন গতকাল বুধবার (২৫ জুন) বিকাল থেকেই ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষ দিকের তিনজন ব্যাটারকে নিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ৫০ রান।
কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে দ্বিতীয় দিনে ৮ উইকেটে ২২০ রান নিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে সংগ্রহটা বাড়াতে ইবাদত হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তাইজুল ইসলাম।
দিনের চতুর্থ ওভারেই ইবাদত এলবিডব্লু হয়ে ফিরে যান। ইবাদতকে এলবিডব্লু করে তৃতীয় উইকেট পেয়েছেন শ্রীলঙ্কান পেসার আসিতা ফার্নান্ডো। ইবাদত রিভিউ নিলেও তা কাজে আসেনি। ১৩ বলে ৮ রান করে ফিরেছেন তিনি।
এরপর নাহিদ রানাকে নিয়ে শেষ উইকেটে ১৮ রানের জুটি গড়েন তাইজুল ইসলাম। নহিদ রানা শূন্য রানেই অপরাজিত থাকেন, পুরো রানটাই আসে তাইজুলের ব্যাট থেকে।
এর আগে প্রথম দিন ওপেনারদের ব্যর্থতা আরও একবার দেখেছে বাংলাদেশ। অনেক আলোচনা-সমালোচানার পরও এ ম্যাচেও একাদশে ছিলেন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু তিনি সেই আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সাদমান আর মুমিনুল হক। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ রানের জুটি ভাঙে মুমিনুল ফিরলে। এ ম্যাচেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ এই টপঅর্ডার ব্যাটার। ফিরেছেন ৩৯ বলে ২১ রানে।
আগের ম্যাচের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এদিন আর দায়িত্ব নিতে পারেননি। অঙ্কুরেই শেষ হয়েছে তার ইনিংস। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ফেরার আগে শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ৩১ বলে মোটে ৮ রান।
বাকিদের যাওয়া-আসার ভিড়ে এতো সময় একপ্রান্ত আগলে রাখা সাদমানও এবার ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে রত্নায়াকের বলে ধনাঞ্জয়াকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এর আগে ৯৩ বলে ৪৬ রান করেন টাইগার এই ওপেনার।
৭৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখানে থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাস। পঞ্চম উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন অভিজ্ঞ এই দুই ব্যাটার। লিটন ৫৬ বলে ৩৪ রান করে ফিরে যান।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মুশফিক আর মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর প্রত্যাশাটা ছিল প্রবল। কিন্তু সেই প্রত্যাশার ভারে নুয়ে পড়েন মুশফিক। বাউন্ডারি হাকাতে ধরা পড়েন তিনি। ডিপ মিড উইকেটে অনেকখানি দূরত্ব পাড়ি দিয়ে মুশফিকের ক্যাচটি নেন ফার্নান্দো। ৭৫ বলে ৩৫ রানে তিনি বিদায় নিলে ভাঙ্গে ১৭ রানের জুটি।
অসুস্থতা কাটিয়ে একাদশে ফিরে তিনি নিজের ছাপ রাখতে পারেননি অলরাউন্ডার মিরাজ। ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ফিরেছেন ৪২ বলে ৩১ রান করে।
মিরাজ ফিরলে নাঈম হাসান আর তাইজুল ইসলাম মিলে ভালোভাবেই লঙ্কান বোলারদের সামাল দিচ্ছিলেন। কিন্তু দিনের এক ওভার বাকি থাকতেই আসিথা ফার্নান্দোর বলে ফিরে যান নাঈম। ফেরার আগে ৫১ বলে ২৫ রান করেন তিনি। এরপর দিনের বাকি সময় পার করে দিয়েছিলেন তাইজুল আর ইবাদত হোসেন মিলে।
বাংলাদেশের ১ম ইনিংস : ৭৯.৩ ওভারে ২৪৭ (সাদমান ৪৬, মুশফিক ৩৫, লিটন ৩৪, তাইজুল ৩৩, মিরাজ ৩১; দিনুশা ৩/২২, আসিতা ৩/৫১)।