মিসবাহ হতে চান আশরাফুল!

মোহাম্মদ আশরাফুলের অনুপ্রেরণা হতে পারতেন মোহাম্মদ আমির। স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির কারণে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন পাকিস্তানের এই বাঁহাতি পেসার। আশরাফুলও আছেন ঠিক একই পরিস্থিতিতে। তিন বছরের নিষেধাজ্ঞার পর পেতে যাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেওয়ার অনুমতি। অপেক্ষা করছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য। তবে আশরাফুল কিন্তু আমিরের দিকে তাকিয়ে প্রেরণা খুঁজছেন না। নিজেকে মেলাতে চাইছেন আরেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার মিসবাহ-উল-হকের সঙ্গে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর দায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আশরাফুলকে। সেই মেয়াদ শেষ হতে বাকি এখনো দুই বছর। তবে আশরাফুলের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে ১৩ আগস্ট। এখন আইসিসির ছাড়পত্র পেলেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে পারবেন সাবেক এই অধিনায়ক। এটাকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পথে প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচনা করছেন আশরাফুল। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের প্রধান প্রতিপক্ষ বয়স। এ জন্যই পাকিস্তানের টেস্ট দলের অধিনায়ক মিসবাহর উদাহরণকে সামনে রাখছেন আশরাফুল।
২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও দুই বছর পর আকস্মিকভাবে থেমে গিয়েছিল মিসবাহর ক্রিকেট ক্যারিয়ার। আর সুযোগ মিলছিল না পাকিস্তান দলে। কিন্তু ২০০৭ সালে মিসবাহ আবার ফিরে আসেন ৩৩ বছর বয়সে। আর এখন ৪২ বছর পেরিয়ে গেলেও মিসবাহ যেন চিরতরুণ। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে নজর কাড়ছেন তিনি। আশরাফুলও ঠিক তেমনটাই করতে চান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারলে। খেলে যেতে চান মিসবাহর মতো।
ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেছেন, ‘প্রথমত আমি ফিরতে চাই ঘরোয়া ক্রিকেটে। বাংলাদেশে ৩০ বছর পেরিয়ে গেলে ক্রিকেটারদের কঠিন সময় পার করতে হয়। আর আমি ফিরছি একটা লম্বা বিরতির পর। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি। কিন্তু আমি দুইটা চ্যালেঞ্জই নিচ্ছি। আমি আরো ১০ বছর খেলে যেতে চাই। ঠিক যেমনটা মিসবাহ খেলছেন ৪২ বছর বয়সে।’
গত জুলাইয়ে আশরাফুল পূর্ণ করেছেন ৩২ বছর। আরো দুই বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারলে তাঁর বয়স দাঁড়াবে ৩৪ বছর। বাংলাদেশের পক্ষে এত বেশি বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার উদাহরণ খুবই বিরল। সবচেয়ে বেশি ৩৮ বছর বয়সে খেলতে দেখা গিয়েছিল মোহাম্মদ রফিককে। আর এখন ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেই প্রায় বাতিলের খাতায় চলে যান বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সেখানে আশরাফুল সত্যিই ৩৪ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। তবে নামটা আশরাফুল বলেই একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না সেই সম্ভাবনা।