শরণার্থী সাঁতারুর আবেদন, ‘আশা হারাবেন না’

‘যারা পৃথিবীতে অন্যায়ের শিকার, আমি তাদের বলতে চাই, আশা হারাবেন না।’ রিও অলিম্পিকে সাঁতরানোর পর এ কথাই বলেছেন সিরিয়ার শরণার্থী সাঁতারু রামি আনিস।
অলিম্পিকে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে অংশ নিয়েছেন রামি আনিস। যিনি গত বছরও জানতেন না কী ঘটতে যাচ্ছে তাঁর ভাগ্যে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে জীবন নিয়ে পালাতে হয়েছে আনিসকে। জীবন বাজি রেখে নৌকায় পাড়ি দিয়েছেন ভূমধ্যসাগর। প্রথমে পৌঁছান তুরস্কে। পরে আশ্রয় পেয়েছেন বেলজিয়ামে।
বিবিসি জানিয়েছে, আনিস ১০০ মিটার শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৫৪ দশমিক ২৫ সেকেন্ড। ৫৯ জনের মধ্যে আনিসের অবস্থান ৫৬তম। কিন্তু তাতে হতাশ নন তিনি। বরং ভরসা দিয়েছেন ‘অন্যায়ের শিকার’ হওয়া পৃথিবীর মানুষদের।
আনিস বলেন, ‘অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার অনুভূতিটা দারুণ। আমি এ স্বপ্ন থেকে জাগতে চাই না।’ তিনি আরো বলেন, ‘শরণার্থীদের ওই দুরবস্থার ওপর আলো ফেলতে চাই আমি।’
আনিসের চাচাও সাঁতারু ছিলেন। আনিসের প্রেরণা তিনিই। রামি আনিস ছাড়াও আরো নয় শরণার্থী অংশ নিয়েছেন রিও অলিম্পিকে।
দেশহীনদের দল
রিও অলিম্পিকে ১০ জনের একটি দল আছে। এরা কোনো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাদের দলের নাম ‘রিফিউজি অলিম্পিক টিম’ (আরওটি)। এরা চারটি দেশের শরণার্থী। এই ১০ জন দক্ষিণ সুদান, ইথিওপিয়া, কঙ্গো ও সিরিয়ার বাসিন্দা। এ ১০ জন এখন বাস করছেন বেলজিয়াম, কেনিয়া, জার্মানি, লুক্সেবার্গ ও ব্রাজিলে।
ওই দলের সদস্যদের মধ্যে সিরিয়ার রামি আনিস অংশ নিচ্ছেন সাঁতারে; বর্তমানে আছেন বেলজিয়ামে। দক্ষিণ সুদানের ইয়েচ পুর বেইল, জেমস নয়াং চেনগিজেক, অ্যানজেলিনা নাদা লোহালিথ, রোজ নাথিক লোকনিয়েন, পাওলো অ্যামোটন লোকোরো অংশ নিচ্ছেন অ্যাথলেটিকসে, বর্তমানে আছেন কেনিয়ায়। ইথিওপিয়ার ইউনাস কিনদে অংশ নিচ্ছেন ম্যারাথনে; বর্তমানে আছেন লুক্সেমবার্গে। কঙ্গোর ইয়োলান্ডে বুকাসা মাবিকা ও পপোলি মিসেঙ্গা অংশ নিচ্ছেন জুডোতে; বর্তমানে আছেন ব্রাজিলে। সিরিয়ার ইয়াসরা মারদিনি অংশ নিচ্ছেন সাঁতারে; বর্তমানে আছেন জার্মানিতে।