রানার স্মৃতি নিয়ে আজও গর্জে উঠবে বাংলাদেশ?

১৭ মার্চ ২০০৭। এদিন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট অব স্পেনে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামেছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ মহাশিক্তধর ভারত। এমন একটা ম্যাচে হাবিবুল-মাশরাফিরা মাঠে নেমেছিলেন বিমর্ষ-মলিন মুখে মাঠে, কালো ব্যান্ড হাতে বেঁধে!
কারণটা অনেকেরই জানা। ঠিক আগের দিনই ১৬ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার মানজারুল ইসলাম রানা। একই সঙ্গে প্রাণ যায় খুলনা বিভাগীয় দলের আরেক ক্রিকেটার সাজ্জাদুল হাসান সেতুর। কিন্তু সেই শোক যে মাশরাফিরা শক্তিতে পরিণত করবেন, সেটা হয়তো কেউ ভাবতেই পারেননি। ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে দারুণ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। আর জরুরি অবস্থার আইনি বাধা ভেঙে রাজপথে উল্লাসে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ওই বছর ভারতকে ছিটকে পড়তে হয়েছিল বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই!
অথচ ওই বছর ভারতের দলটা ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, বীরেন্দর শেবাগ, রাহুল দ্রাবিড়, যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের নিয়ে গড়া ভারতীয় দল অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৯১ রানে! আগুনছড়া বোলিং করে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন মাশরাফি। ৩৮ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন তিনি। জাতীয় দলের সতীর্থ হিসেবে বাংলাদেশ দলের সবার সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা ছিল রানার। তবে সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠতা ছিল মাশরাফির। প্রিয় বন্ধুর স্মৃতি বুকে নিয়ে মাশরাফি যেন সেই ম্যাচে পেয়েছিলেন অদৃশ্য কোনো শক্তি!
আজ আরেকটি ১৬ মার্চ, রানার মৃত্যুদিন। রানার স্মরণে যতবারই কালো ব্যান্ড পরে বাংলাদেশ মাঠে নেমেছে, প্রতিবারই জয় পেয়েছে। ২০১২ সালে ঢাকায় এশিয়া কাপের ম্যাচটাও এর জ্বলন্ত উদাহরণ। কাকতালীয়ভাবে সেখানেও ছিল প্রতিপক্ষ ভারত। ওই দিন ‘লিটল মাস্টার’ শচীন টেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ২৮৯ রান তোলে ভারত। ‘পাহাড়সম’ সেই রান বাংলাদেশ টপকে গিয়েছিল হেসেখেলে। জয় আসে ৫ উইকেটের!
রানার মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ আবার মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ অবশ্য ভারত নয়, পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের ভেন্যুটা অবশ্য ভারতেরই মাটিতে, কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে। স্বাভাবিকভাবে ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভেসে উঠছে শোককে শক্তিকে রূপান্তরিত করা দিনগুলোর কথা। তাহলে কি আজও গর্জে উঠবে বাংলাদেশ?