ক্যারিবীয় পেস আক্রমণের 'পঞ্চপাণ্ডব'

ক্যারিবিয়ান পেস আক্রমণের কথা মাথায় এলেই মনে পড়ে যায় অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, ম্যালকম মার্শাল, কোর্টনি ওয়ালস, কার্টলি অ্যামব্রোসদের ক্ষুরধার বোলিংয়ের কথা। কিংবদন্তি এই পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে অনেক বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানকেও হিমশিম খেতে হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সেই স্বর্ণালি সময় অবশ্য এখন আর নেই। নেই তাদের সেই দুর্দান্ত পেস আক্রমণও। তবে এবারের যুব বিশ্বকাপে ক্যারিবীয় পাঁচ তরুণ পেসারের দাপট সেই স্বর্ণালি সময়ের কথাই আবার মনে করিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট-বিশ্বকে।
আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই এই পাঁচ তরুণ পেসার বেশ দাপট দেখিয়েছেন। বলা যায়, তাঁদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালে উঠেছে।
এবারের যুব বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কখনোই ফেভারিটদের কাতারে ছিল না; বরং অন্য দলগুলো বরাবরই তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে চেয়েছে। আর সবাই তাদের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে। শুধু একটি মাত্র কারণে। উইন্ডিজের দুর্দান্ত পেস আক্রমণের সামনে অন্য দলগুলো বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। তাই একে একে সব ধাপই পেরিয়ে গেছেন ক্যারিবিয়ান তরুণরা।
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনালেও ছিল একই চিত্র। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পঞ্চপাণ্ডবদের সামনে ভারতের ব্যাটসম্যানরা যেন একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। একমাত্র সরফরাজ খান (৫১) ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন আসা-যাওয়ার দলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে সবার আগে আসবে ডানহাতি পেসার আলজারি জোসেফের নাম। আসরের সেরা পাঁচ পেসারের মধ্যে পঞ্চম স্থানে আছেন এই তরুণ। ছয় ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ফাইনালে ভারতকে অল্প রানের মধ্যে আটকে ফেলতে ৩৯ রান তিন উইকেট নিয়ে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
এর পরই আসবে রায়ান জনের নাম। ফাইনালে তিনিও দারুণ বোলিং করেছেন। নিয়েছেন ৩৮ রানে তিন উইকেট। পুরো আসরেও তাঁর সাফল্য কম নয়, পাঁচ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। তাঁর মোট সংগ্রহ তুলনামূলক কম হলেও প্রতিটি ম্যাচেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন।
কেমো পলও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ফাইনালে। ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে ফেলতে অন্যতম অবদান ছিল তাঁরও। এই তরুণ পেস বোলার অলরাউন্ডার আসরে মোট ছয় ম্যাচ খেলে নিয়েছেন সাত উইকেট।
এ আসরে নাচের কারণে পরিচিতি পাওয়া সামার স্প্রিঙ্গারও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ফাইনালে খুব ভালো কিছু করতে পারতে না পারলেও নিয়েছেন ২৪ রানে এক উইকেট। পুরো আসরে তাঁর পারফরম্যান্স খুব একটা মন্দ নয়। ছয় ম্যাচে এই ডানহাতি পেসার নিয়েছেন সাত উইকেট।
সব ম্যাচে প্রথম একাদশে জায়গা করে নিতে না পারলেও নিজেকে ভালোই চিনিয়েছেন চেমার হোল্ডার। যুব বিশ্বকাপে তিনি খেলেছেন মাত্র তিন ম্যাচ। তিন ম্যাচ থেকে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। ফাইনালে অবশ্য তিনি পেয়েছেন মাত্র একটি উইকেট।