কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে ধর্ম উপদেষ্টার শুভেচ্ছা

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার পর মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব-২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরকে মৈত্রীময় প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
গতকাল রোববার (৫ অক্টোবর) এক বার্তায় তিনি বলেন, বৌদ্ধধর্ম বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ধর্ম। আড়াই হাজারের অধিককাল আগে গৌতম বুদ্ধ এ ধর্ম প্রচার করেন। সপ্তম শতকের চৈনিক পরিব্রাজক ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হিউয়েন সাঙ (ঘুয়ান জাং) এর লেখনী থেকে জানা যায় গৌতম বুদ্ধ বঙ্গদেশে এসে ধর্মপ্রচার করেছিলেন। সুতরাং বঙ্গদেশ মহামানব বুদ্ধের স্মৃতিধন্য পুণ্যভূমি। সপ্তম শতকে বিহার, কর্ণসুবর্ণ, তাম্রলিপ্ত, পুন্ড্রবর্ধন ও সমতটে অবস্থিত অসংখ্য সংঘারামে প্রায় দেড় লক্ষাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু বসবাস করতেন। বিহারের নালন্দা বিহার, পাহাড়পুরের সোমপুর মহাবিহার, ময়নামতির শালবন, মহাস্থানের বাসু বিহারের ধ্বংসাবশেষ বৌদ্ধধর্মের অতীত গৌরবের সাক্ষ্য বহন করে।
বৌদ্ধধর্ম ও দর্শন মতে মানুষের অন্তিম লক্ষ্য নির্বাণ। চারি আর্যসত্য ও আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ হলো নির্বাণ লাভের সোপান। বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ সংসারজীবন ত্যাগ করে অপার্থিব, পারমার্থিক ও নৈর্বাণিক জ্ঞানানুশীলন ও ধ্যান সাধনায় নিমগ্ন থাকেন। অধীত, উপলব্ধ ও ধ্যানলব্ধ সদ্ধর্ম তারা বহুজন সুখশান্তি ও হিতার্থে প্রচার করেন। অন্যদিকে গৃহী বৌদ্ধরা প্রব্রজিত ভিক্ষুসংঘকে ভিক্ষান্ন, চীবর, আবাস ও চিকিৎসা যাবতীয় বস্তু সামগ্রী দানোৎসর্গ করেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় শাস্ত্রানুসারে এরকম বস্তু দানের মধ্যে কঠিন চীবর দান সবচেয়ে উত্তম দান। সেজন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষা ব্রত যাপনের পর এক মাসব্যাপী প্রতিটি বিহারে এ কঠিন চীবর দান উদ্যাপন করেন।
এবছর বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে বৃহত্তর পরিসরে কঠিন চীবর দান আয়োজনের উদ্যোগকে ধর্ম উপদেষ্টা স্বাগত জানান এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তাবৃন্দসহ অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস এ উদ্যোগ বৌদ্ধদের ধর্মচেতনাকে শানিত করবে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় কঠিন চীবর দান-২০২৫ উপলক্ষে স্মরণিকা প্রকাশনাকেও তিনি সাধুবাদ জানান। বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ও দায়ক-দায়িকাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণে জাতীয় কঠিন চীবর দানোৎসবের তিনি সফলতা কামনা করেন।