Skip to main content
NTV Online

জীবনধারা

জীবনধারা
  • অ ফ A
  • ফ্যাশন
  • রূপচর্চা
  • রেসিপি ও রেস্তোরাঁ
  • গৃহসজ্জা
  • সম্পর্ক
  • আদবকেতা
  • শখ ও সংগ্রহ
  • কেনাকাটা
  • রাশিফল
  • অন্যান্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • জীবনধারা
ছবি

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

কানে নজরকাড়া লুকে জাহ্নবী কাপুর

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

ভিডিও
নাটক : কোটিপতি
নাটক : কোটিপতি
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৩৮
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
শেখ সাইফুর রহমান
১৫:২৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১৫:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
শেখ সাইফুর রহমান
১৫:২৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১৫:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
আরও খবর
সৌন্দর্যের বুননে ব্যস্ত কারচুপির কারিগররা
অফিস মিটিংয়ে কেমন হবে আপনার সাজগোজ?
চুল কোঁকড়ানো করতে চান? জেনে নিন সহজ পদ্ধতি
‘মা’ দিবসের আয়োজন নিয়ে রঙ বাংলাদেশ
ঐতিহ্য: বাংলাদেশের ছয় শাড়ি

বাঙালির বিয়ে মানেই বেনারসি

শেখ সাইফুর রহমান
১৫:২৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১৫:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
শেখ সাইফুর রহমান
১৫:২৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫
আপডেট: ১৫:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫

এখন শীত। এখন ভর মৌসুম বিয়ের। আর বাঙালির বিয়ে মানেই তো বেনারসি। ইদানীং অন্য অনেক কিছুই বেনারসির পরিবর্তে বিয়ের শাড়ি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে, তবুও ঐতিহ্যপ্রিয় বাঙালির কাছে বেনারসির কদর আজো রয়ে গেছে অবিকল। এ জন্যই বিয়ের মৌসুমে অনন্য এই শাড়ি, এর বয়নশৈলী এবং ক্রমবিবর্তন আর অবশ্যই এই শিল্পের বর্তমান অবস্থা দেখে নেওয়া যেতে পারে সমসময়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ।

বস্তুত সভ্যতাগর্বী আজকের পৃথিবীতে হতেগোনা কয়েকটি জাতিগোষ্ঠী তাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী তথা প্রাচীন পোশাকের ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে। বাঙালি এবং তার শাড়ি সেগুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। কারণ, শাড়ি কোনো বিশেষ আচার বা অনুষ্ঠানের পরিধেয় নয়; বরং এখনো শাড়ি বাঙালির নিত্যপরিধেয়। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চলে তাঁতের শাড়ি বোনার প্রচলন ছিল এবং সেই চর্চা বা বলা যেতে পারে ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে।

অনবদ্য পরিধাননৈপুণ্য এবং প্রয়োজন-বাস্তবতার সঙ্গে সংগতি রেখেই হয়ে থাকে শাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিন্যাস। এই বিস্ময়কর সৃজনশীলতার নেপথ্যের কুশীলবরা আমাদের পূর্বপুরুষ, যাঁরা ‘শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী’ হিসেবে কিংবদন্তি হয়ে আছেন।

আমাদের এ অঞ্চলে নানা ধরনের শাড়ি বোনা হয়ে আসছে আবহমানকাল ধরে। জগদ্বিখ্যাত হয়েছে। যদিও এই ভূখণ্ডের বয়নশৈলী না হয়েও বেনারসি সময়ের বিবর্তনে মিশে গেছে এখানকার জলহাওয়ায়। হয়ে উঠেছে বাঙালির।

ইতিহাস

আর্য সমাজে বস্ত্রবয়নের সঙ্গে যুক্ত পেশাজীবীরা তন্তুবায় নামে পরিচিত ছিলেন। ঋগ্বেদে বিভিন্ন ধরনের কাপড় বোনার উল্লেখ মেলে। হিরন্ময় বস্ত্র সেগুলোর একটি। সোনার সুতা মিশিয়ে বোনা হতো এই কাপড়। জানা যায়, এই তন্তুবায় সম্প্রদায় সিন্ধু নদের তীর থেকে ক্রমে গঙ্গার দিকে নেমে থিতু হয়েছে নানা জায়গায়। গঙ্গার তীরবর্তী বিভিন্ন জনপদে তাদের বসতি এখনো রয়েছে, যেমন—বেনারস, মুর্শিদাবাদ। বেনারস বা বারানসি বিখ্যাত ব্রোকেড আর শাড়ির জন্যই। ফলে এই শাড়ি বিশ্বব্যাপী বেনারসি শাড়ি নামেই জনপ্রিয় হয়েছে। র‍্যাফেল ফিচের (১৫৮৩-৯১) বিবরণ থেকে বেনারসের সুতি বস্ত্রশিল্পের কথা জানা যায়। তবে ষোড়শ শতকের গোড়ায় গুজরাট থেকে তাঁতিরা বেনারসে গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। তাঁরাই সম্ভবত ব্রোকেড বোনা শুরু করেন সেখানে।

কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, পাণিণির রচনা এবং আরো পরে ফ্রাঁসোয়া তেভারনিয়েরের বিবরণেও বেনারসের বস্ত্রবয়ন শিল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়। তেভারনিয়ের বেনারসকে প্রাচ্যের এথেন্স আখ্যা দেন। এরপর নানা উত্থান-পতন সত্ত্বেও আজ স্বমহিমায় বিরাজমান বেনারসি শাড়ি। বলে রাখা প্রয়োজন, এই শাড়ির ডিজাইন এবং মানোন্নয়নে মুঘলদের অবদান অনস্বীকার্য। তারা এই বয়নে পারস্যের নকশা এখানে সংযোজন করে। কল্কা বা পেইজলি এর অন্যতম উদাহরণ। বর্তমানে অন্তত ১২ লাখ মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

বিয়েতে কেন বেনারসি

এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে সদুত্তর মেলে না। এমনকি কবে থেকে বেনারসি বিয়ের শাড়ি হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়েছে, সেটাও আমাদের জানা নেই। তবে এই শাড়ির বুননে রেশমের সঙ্গে একসময় সোনার জরি ব্যবহার করা হতো। সে জন্য এই শাড়িকে পবিত্র শাড়ি মনে করা হতো। এ ছাড়া বিয়ে মেয়েদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটা পবিত্রও। এর সঙ্গে রয়েছে ধর্মীয় আচার ও রীতিনীতি। এ জন্যই হয়তো বিয়েতে বেনারসি ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অনেকে ধারণা। তবে বাঙালি বিয়ের জন্য আজো বেনারসি খোঁজে। বিশেষত, লাল বেনারসি। এটা যেন আমাদের পরম্পরার অংশ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশে বেনারসি, বাংলাদেশের বেনারসি

বাংলাদেশে এই শিল্প পরিযায়ী পরিস্থিতি থেকে কালক্রমে এ মাটিরই হয়ে গেছে। একে বলা যেতে পারে যথার্থই লোকজশিল্পের অভিবাসন। তবে আজকের মিরপুরে যে বেনারসিপল্লী, তার জন্ম অনেক পরে। বিশেষত, স্বাধীনতার পরে। যদিও বেনারস থেকে বাংলাদেশে ভাগ্যান্বেষণে আসা শুরু করেছিল ভারত বিভাগেরও আগে থেকে। সূচনাটা ১৯৩০-এর দশকে। ইংরেজ তাড়ানোর প্রক্রিয়ার পালে তখন বাতাস লেগেছে। সাতচল্লিশে ভারত ভাগের আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিপন্ন হয় অসংখ্য মানুষ। অনেকে সে সময় এই দেশে চলে আসে। তখনই জানা হয়ে গিয়েছিল, নতুন দেশ হচ্ছে মুসলমানদের জন্য। ফলে আগ্রহটা আরো বেশি ছিল। যতদূর জানা যায়, বেনারস থেকে সে সময় চারশ পরিবার পূর্ব পাকিস্তানে আসে ভাগ্যান্বেষণে। বিভাগ-পরবর্তী ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের দরুন ভারত থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান তদানীন্তন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে বসতি স্থাপন করেন। তাঁদেরই একটা অংশ ছিল ভারতের উত্তরপ্রদেশের, তন্তুবায় শ্রেণি বা আনসার। তাঁরা তাঁদের তাঁত নিয়েই নতুন ঠিকানার সন্ধানে ঢাকায় আসেন। তবে ভারত বিভাগ-পূর্ব সময়ে পার্বতীপুরের বাচ্চু সর্দার, রাজশাহীর রফিক মিয়া ও পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ীর হাফিজ মোহাম্মদ রেজার বেনারসির কারখানা ছিল। তখন এখানে যেমন বোনা হতো, তেমনি বেনারস থেকেও কাপড় এনে বিক্রি করা হতো।

সাতচল্লিশের পর ঢাকা (এখন পুরান ঢাকা) হয়ে ওঠে বেনারসি বয়নশিল্পের মূলকেন্দ্র। পাকিস্তানের করাচির লালুক্ষেতও একইভাবে সরগরম হয়ে ওঠে। যা হোক, ঢাকার বেচারাম দেউড়ী, কাজী আলাউদ্দিন রোড, নিমতলী, কায়েৎটুলী, দয়াগঞ্জ, গেণ্ডারিয়া, নবাবপুর, টেকেরহাট ও হুসেন মার্কেটই ছিল প্রধান। এরপর মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১ ও ৬ নম্বরে কিছু কারখানা গড়ে ওঠে। তখন মিরপুরের সুলতান বাবা ও আমানত চাচা, বেচারাম দেউড়ীর হোফিজ মো. রেজা, গোলাম রসুল সর্দার, রাজা বেনারসি, পুরান ঢাকার মজনু মিয়া, কাল্লু মিয়া, রশিদ মিয়া, মিরপুরের হারুন শেঠ এ কাজের জন্য বিশেষ পরিচিত ছিলেন।

তবে বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বেনারসি কারখানা গড়ে তোলেন হুসেন মার্কেটের মিয়া সাহেব। এই সিলেটি ব্যবসায়ীর নিউমার্কেটে ফেব্রিক হাউস বলে একটি দোকান ছিল। আইয়ুব খানের সময় মিরপুর-১০, ১১ ও ১২ নম্বরে জায়গা দেওয়া শুরু হলে অনেক উর্দুভাষী এখানে এসে বাড়ি করেন। কেউ বা ভাড়ায় থাকতে শুরু করেন। তখন আস্তে আস্তে একটা-দুটো করে ফ্যাক্টরি গড়ে ওঠে। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উর্দু ও হিন্দি ভাষাভাষীরা মিরপুরে এসে আশ্রয় নেন। তাঁদের সবাই উত্তরপ্রদেশের ছিলেন না। আমাদের একটা ভুল ধারণা এখনো রয়েছে, উর্দুভাষী মানেই বিহারি বা পাকিস্তানি। তবে ওই সময়েই বেনারসি বস্ত্রবয়নে বেনারস ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ সম্পৃক্ত হয়। কিছু কিছু বাঙালিও এদের সঙ্গে যোগ দেন। স্বাধীনতার পরে বাঙালিদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। আদি বেনারস এবং এর আশপাশের যেসব এলাকা বেনারসি শাড়ি বোনার জন্য বিখ্যাত, যেমন—মদনপুরা, কাশি, বড়িবাজার, সোনারপুরা, চৌকাঘাট পানিট্যাঙ্কি—এসব জায়গার অনেক কারিগরই ঢাকায় চলে আসেন। এখনো জীবিত আছেন এঁদের কেউ কেউ। জামাল উদ্দিন মিঞা, রাজা বেনারসি, হাজি ইদ্রিস, সিদ্দিক ঝোলা, বাইতুল্লাহ এঁদের অন্যতম। তাঁদের পরম্পরাগত শিল্পে অন্যদের প্রবেশ রাজা বেনারসির কাছে অনুপ্রবেশের সমান। ৮৫ বছর বয়সেও সমান কর্মক্ষম রাজা মিয়ার কথায় তাই যেন ক্ষোভই ঝরে।

হালহকিকত

বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদ প্রদত্ত শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী (বেনারসি বস্ত্রবয়ন) সম্মাননায় ভূষিত মোহাম্মদ রফিক বেনারসির বর্তমান চিত্র সম্পর্কে জানালেন, একসময় রমরমা অবশ্যই ছিল; কিন্তু এখন সেদিন নেই। তিনি কারখানা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখান বাস্তবচিত্র। তাঁত আছে, কারিগর নেই। অনেক দক্ষ তাঁতিই অন্য পেশায় চলে গেছেন। রিকশা চালান, পান-বিড়ির দোকানদারি করেন, কাফনের দোকান চালান, অনেকে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি কিংবা কারচুপি, আরি ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন, ড্রাইভারিও করেন কেউ কেউ। বর্ষীয়ান এই শিল্পী গভীর দুঃখ নিয়ে বললেন, ১৯৮০-৮২ সালেও যেখানে এক লাখ পরিবার ছিল এই শিল্পের সঙ্গে, সেখানে এখন কোনোমতে টিকে আছে মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ পরিবার।

মিরপুরে বেনারসি শাড়ির দোকান গড়ে ওঠা শুরু করে আশির দশকের শেষ দিকে। তখন মাত্র পাঁচ-ছয়টি দোকান ছিল। আস্তে আস্তে বেড়েছে। তবে এসব দোকানে দেদার বাংলাদেশি ও ভারতীয় শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।

বেনারসি শাড়ির রকম

বেনারসি শাড়ি সব সময়েই সিল্ক সুতায় বোনা হয়ে আসছে। তবে বুননে জমিন অলংকরণের জন্য রুপা ও সোনার জরি ও মিনা করার জন্য অন্য সুতা বা জরি ব্যবহার করা হয়েছে। মার্সেরাইজড কটন বা গ্যাস সিল্ক সুতা ও সিল্ক সুতা ব্লেন্ড করেও উন্নত মানের বেনারসি বোনা হয়। এ ছাড়া আরো তৈরি হয় কটন বেনারসি, স্বর্ণকাতান ইত্যাদি। বর্তমানে বেনো জলের মতোই ঢুকছে নানা ধরনের কৃত্রিম সুতা। তাই আসল বেনারসি পাওয়া মুশকিল। এখনো এই শাড়ির জমিন নকশা হাতে সুতা ঘুরিয়েই করা হয়ে থাকে।

শাড়ির বিভিন্ন নাম

ডিজাইন ও সুতাভেদে শাড়ির বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়ে থাকে, যেমন—জংলা, বেল স্যাটিন, কাড়িয়াল, জামেবার, স্বর্ণকাতান, চান্দেরি, অরগাঞ্জা কাতান, পাটোলা, জুট কাতান ইত্যাদি।

তৈরির নানা ধাপ

শাড়ি তৈরির পুরো বিষয়টি কায়িক শ্রমনির্ভর। এ জন্য প্রয়োজনীয় ধাপগুলো তাঁতিরা ধারাবাহিকভাবেই কার্যকর করে থাকেন। ধাপগুলো যথাক্রমে—১. ডিজাইন ও কালার কম্বিনেশন; ২. খারি করা বা প্রসেসিং। এ ক্ষেত্রে সুতা ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে ধোলাই করে ‘র’ সিল্ক সুতার (রাজশাহী সিল্ক কিংবা চায়না সিল্ক) আঠা তুলে ফেলা হয়; ৩. সুতা রঙ করা; ৪. নাটাই ও নলি করা; ৫. টানা হাঁটা বা ড্রামিং; ৬. টানা প্যাঁচা (বা নরদে সুতা ভরা); ৭. জুড়াই, দুটো সুতাকে ধরে হাতে মোচড় দেওয়া হয়। স্থানীয় ভাষায় একে মুররি বলে; ৮. তাঁতে জোড়া; ৯. জ্যাকার্ড কৌশলের সংযুক্তি (জ্যাকার্ডের মাধ্যমে নকশার সংযোজন); ১০. শাড়ি বোনা আরম্ভ; ১১. পানি দেওয়া। প্রতি এক গজ কাপড় বোনার পর মুখে পানি নিয়ে তা ফুঁ দিয়ে সুতার উপর ফেলা হয়। এভাবে ঢিলা সুতা সমান করে টাইট করা হয়; ১২. শাড়ি কেটে তোলা এবং ১৩. হালকা ইস্ত্রি।

কাঠের তৈরি যে যন্ত্র দিয়ে তাঁতিরা এই অপূর্ব শিল্পসুষমাময় পণ্য তৈরি করে থাকেন, তাকে পিটলুম বা গর্ততাঁত বলে। স্থানীয় ভাষায় বলা হয় খাড্ডি।

উপকরণ

টু ফ্লাই ‘র’ সিল্ক সুতা টুইস্ট করার পর তাকে কাতান বলা হয়। এটা টানায় ব্যবহার করা হয়। ফোর ফ্লাই সুতাকে বানা বলে। এটা ভরনায় ব্যবহার করা হয়। ডিজাইন করার জন্য জরির ব্যবহার আগে থেকেই হয়ে আসছে। একসময় সাচ্চা জরি বা আসল জরির (সোনা ও রুপা) ব্যবহার ছিল। বর্তমানে নেই। এখন বিভিন্ন রং ও ম্যাটেরিয়ালের কৃত্রিম জরি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া উদ্ভাবনের ধারায় ডিজাইনের জন্য ব্যবহার করা হয় পাটের সুতা, এন্ডি সিল্ক, তসর, প্যালেক্স, পলিয়েস্টার, কৃত্রিম সিল্ক বা রেয়ন, নাইলন, গ্যাস সিল্ক বা মার্সেরাইজড কটন, আর্ট সিল্ক ইত্যাদি।

ডিজাইন

বর্তমানে ডিজাইন আগের চেয়ে উন্নত ও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। তবে পুরোনো ডিজাইনের কদর কমেনি। এখনো বিয়েতে একটা বেনারসি সব মেয়েই প্রত্যাশা করে থাকে। যদিও ডিজাইন করার মতো দক্ষ শিল্পী পাওয়া এখন কঠিন। তবু পুরো মিরপুর ঘুরে জানা যায়, এখানে এখনো বেশ কয়েকজন দক্ষ বয়নশিল্পী রয়েছেন। রাজা বেনারসি, মো. রফিক, হাজি মোহাম্মদ আছির, মুক্তার ১ ও ২, রওশন, শামীম, আনোয়ার, মুস্তাকিম তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। ডিজাইন মাস্টারদের মধ্যে মুন্না ও মিস্টার, সালাউদ্দিন ও আকবর, পাঞ্চ মাস্টার রফিক এগিয়ে রয়েছেন অন্যদের থেকে। তবে বয়নশিল্পীদের অনেকেরই অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাঁরা এই শিল্পে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করতে পারছেন না। অন্যদিকে এতে ধৈর্যের প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে তা প্রায় নেই। এ জন্য তাঁরা কাজে আসতে চায় না। উপরন্তু উপার্জনও কম। অথচ কারচুপি কারখানায় সহজে বেশি আয় করার সুযোগ রয়েছে। রিকশা চালিয়েও সেটা সম্ভব। ফলে কেনই বা আসবে তারা এত ধৈর্য ও নিষ্ঠা নিয়ে, শিল্পচর্চার তাগিদে? না হয় না-ই বা রক্ষা পেল পূর্বপুরুষের পরম্পরা!

আমাদের দেশে টেক্সটাইল ডিজাইনারের অভাবের ফলে বেনারসি তাঁতিরা ভারতের বেনারস থেকেই বিভিন্ন সময়ে ডিজাইন নিয়ে আসেন। কিংবা শাড়ি এনে সেটাই ফের তৈরি করে থাকেন বলে জানালেন মাহমুদা সিল্ক হাউসের মালিক হাজি মোহাম্মদ আছির।

তথ্য সংগ্রহের জন্য অনেকটা সময় মোহাম্মদ রফিকের সঙ্গে কাটাতে হয়েছে। তাঁর সঙ্গে অনেক কথাও হয়েছে। তিনি বারবার একটা কথাই বলেছেন। সেটা হলো, বেনারসি তাঁতিদের পুনর্বাসন। এই পল্লী সত্যিকারের বেনারসিপল্লী হিসেবে গড়ে তোলার আবেদনও তিনি জানিয়েছেন সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তিনি মনে করেন, প্রকৃত তাঁতিদের পুনর্বাসন করা হোক, দেওয়া হোক প্রকৃত সম্মান। তাহলেই তাঁদের পক্ষে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করে এই শিল্পের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভবপর হবে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কমবয়সী ছেলেদের এনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্পী তৈরি করা সম্ভব। আমাদের দেশের ছেলেদের মেধার অভাব নেই। প্রয়োজন প্রশিক্ষণের। এ ক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন মোহাম্মদ রফিক। তিনি মনে করেন, নতুন কারিগর তৈরি হলে বেনারসি বয়নশিল্প পুনরুজ্জীবিত হবে।

অনেক কিছুর মতোই এই শিল্পটাকে হারাতে বসেছি আমরা। না আছে সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, না আছে প্রয়োজনীয় সহায়তা। তাই একসময় বাংলাদেশের বেনারসি মিরপুরে তৈরি হয়ে ভারতীয় বলে ভারতেই বিক্রি হতো, সেখানে এখন আমরা ভারত থেকে দেদার শাড়ি এনে এখানে বিক্রির করছি। তাই শাড়ির দোকানের বিক্রিবাট্টা দেখে এই শিল্পে সুবাতাস বইছে বলে অনেকেই ভুল ভাবতে পারেন। এই চিত্রটা একেবারে উল্টো। তাই বেনারসি বয়নশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

লেখক : সাংবাদিক ও লাইফস্টাইল প্রফেশনাল

sksaifurrahman@gmail.com

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?
  2. আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?
  3. ‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি
  4. যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ
  5. মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল
  6. রহস্য নিয়ে আসছে অজয়ের ‘দৃশ্যম ৩’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত

মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?

আদিত্যের সঙ্গে প্রেমে শিক্ষা হয়েছে, কোন ভুলটা আর করতে চান না অনন্যা?

‘ধুম ৪’ সিনেমায় খলনায়ক রণবীর, পরিচালক আয়ন মুখার্জি

যে সিনেমায় অভিনয় করতে টাকা নেননি অমিতাভ

মা হলেন ‘হীরামন্ডি’ খ্যাত অভিনেত্রী শারমিন সেগাল

ভিডিও
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
এই সময় : পর্ব ৩৮২৮
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫১
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৬
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫২
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x