সুস্থ থাকতে সচেতন হতে হবে নারীকেই

৮ মার্চ, বিশ্ব নারী দিবস। ‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ সুস্থ নারী ছাড়া সুস্থ সমাজ সম্ভব নয়। যে পরিবারে নারী অসুস্থ, সে পরিবারের সবকিছু যেন থমকে যায়। নারীদের স্বাস্থ্যগত অধিকারের বিষয়টিও মাথায় রাখা জরুরি। তাই নারীর সুস্থতা নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।
প্রথমেই আসি নারীদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা কী কী হতে পারে, সেই বিষয় নিয়ে। নারী তার অস্তিত্ব জানান দেয় ঋতুস্রাবের মাধ্যমে। ঋতুস্রাব নিয়ে নারীদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা অনেকের ক্ষেত্রেই হয়। এমন ব্যথা কিন্তু স্বাভাবিক। ব্যথা বেশি হলে ব্যথানাশক ওষুধ খেলেই চলবে। খুব বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নারীরা বিভিন্ন ক্যানসারে ভুগে থাকেন। এর মধ্যে স্তন ক্যানসার, জরায়ুমুখ ক্যানসার অন্যতম। এই ক্যানসারগুলোয় আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর অনেক নারী প্রাণ হারান। কিন্তু সত্য হলো, এ ক্যানসারগুলো শুরুতে নির্ণয় করতে পারলে প্রাণহানি প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য নিয়মিত চেকআপ করতে হবে। আমাদের মা-বোনরা লজ্জায় এ ব্যাপারগুলো কারো কাছে প্রকাশ করতে চান না। এতে ক্যানসারগুলো ছড়িয়ে পড়ে। তখন আর কিছু করার থাকে না। এ জন্য লজ্জা করবেন না। প্রতি মাসে নিজে নিজে স্তন একবার পরীক্ষা করুন। এ ছাড়া প্রতিবছরে একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা করান। যদি পরিবারে মা, খালা, নানি, দাদি কারো স্তন ক্যানসার থাকে, তাহলে দেরি না করে আজই চিকিৎসককে দেখান।
জরায়ুমুখ ক্যানসারও কিন্তু শুরুতে ধরতে পারলে প্রাণে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ভায়া টেস্ট করে এই ক্যানসার সম্পর্কে ধারণা করা যায়। প্যাপ স্মেয়ারও করা যায়। সব সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষাগুলো বিনামূল্যে করা যায়। এ পরীক্ষা করা না থাকলে আজই করে ফেলুন। তিন বছর পরপর একবার পরীক্ষাগুলো করান। যদি পরিবারে কারো জরায়ুমুখ ক্যানসার থাকে, তবে এখনই চিকিৎসককে দেখান।
নারীদের আরেকটি সমস্যা হলো সংক্রমণ। প্রস্রাবে হতে পারে সংক্রমণ। এতে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করে, ঘনঘন প্রস্রাব হয়, প্রসাব করার পর ব্যথা আরো বাড়ে। এমনটি হলে প্রস্রাব পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। প্রস্রাবে সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুন। ঋতুস্রাবের সময় নোংরা কাপড় ব্যবহার করবেন না।
সাদা স্রাব মেয়েদের আরেকটি বড় সমস্যা। এটিও কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অনেকে মনে করেন, এ রোগের বুঝি চিকিৎসা নেই। তাই নিয়তি বলেই মেনে নেন। না, এ রোগের চিকিৎসা আছে। চিকিৎসার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতাও মেনে চলতে হবে। প্রস্রাবের পর পরিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত পানিতে লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। ভালো কাজ দেবে।
তাই সুস্থ থাকুন এবং নিজের প্রতি সচেতন হোন। কেননা, নিজে ভালো থাকলে ভালো রাখতে পারবেন অন্যদেরও।