ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমানকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবির) পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তার বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন তারা। এ সময় দ্রুত তার সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানান তারা।

আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে আশিকুর রহমানের বাবাও উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে তার বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আজ রোববার সকালে তার বন্ধুদের মাধ্যমে শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। গতকাল রাত ১২টার দিকে তাকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। আমি লালবাগ ও শাহবাগ থানায় গিয়েছিলাম সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য কিন্তু উনারা জিডি গ্রহণ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমি চাই অতি দ্রুত আশিককে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিক।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নিয়ে যাওয়া হলো কিন্তু এখন তা অস্বীকার করা হচ্ছে। আশিককে নির্দোষ প্রমাণ করা আমার কাজ নয়। কিন্তু একজনকে যে নিয়ে গেল তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না, এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। সে হিসাবে আমরাও কিন্তু নিরাপদ না।’

অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এখানে ইন্টারেস্টিং একটি বিষয় হলো গতকাল ওকে যখন নিয়ে গেল তখন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন একটা নাম্বার দিয়ে যান। সেই নাম্বারে আজকে আমরা কল করলাম তিনি বলতেছেন যে তিনি নাকি এখানে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। এখানে স্পষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আরেক শিক্ষক ঊষাণ আরা বাদল বলেন, ‘আমি আমার ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি। এটি আসলেই একটা মর্মান্তিক বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা দ্রুত তাকে ফিরে পাব বলে আশা করছি।’

আশিকুর রহমানের সহপাঠী সজীব হোসেন বলেন, ‘তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন নিয়ে গেছে এ বিষয়ে আমাদের এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি। আমরা প্রক্টর স্যারের কাছে গিয়েছি, তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তবে প্রক্টর অফিস থেকে বলা হয় খুব শিগগিরই তারা সন্ধান দেবেন। আমরা অতি দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরে চাই।’

আশিকুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলায়। তার বাবা সিরাজুল ইসলাম পেশায় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আশিকুর চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তিনি আজিমপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।