‘উচ্চ শুল্কের কারণে মানসম্পন্ন খেলনা মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন’

প্লাস্টিক খেলনা শিল্পে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। মানসম্মত মোল্ড ও কাঁচামাল আমদানিতে অতি উচ্চ শুল্কের কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে মানসম্পন্ন খেলনা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণ : খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন ও রপ্তানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ।
বক্তারা বলেন, প্লাস্টিক খেলনা শিল্পে অগ্রযাত্রায় উচ্চ শুল্ক, আমদানি-নির্ভর প্যাকেজিং, জটিল বিধিনিষেধ এবং লাইসেন্সকৃত খেলনা বাজারে সীমিত প্রবেশাধিকার বড় বাধা হয়ে আছে। এসব কাটিয়ে উঠতে স্থানীয় পরীক্ষাগার, ডিজাইন ট্রেনিং, বিশ্ববিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সহযোগিতা, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং নতুন বাজারে প্রবেশে কূটনৈতিক উদ্যোগ খুবই প্রয়োজন।
ফেব্রিকভিত্তিক খেলনা শিল্পে সমস্যায় পড়তে হয় না জানিয়ে গোল্ডেন সন লিমিটেডের এমডি বেলাল আহমেদ বলেন, প্লাস্টিকভিত্তিক খেলনা শিল্পে নীতিমালার অভাবে উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েন। খেলনা শিল্পে এখনও উদ্যোক্তাদের জন্য শক্তিশালী সংগঠন এখনও গড়ে ওঠেনি বলে কাপকেক এক্সপোর্টস লিমিটেডের সিইও ইয়াসির ওবায়েদ।
বিশ্বের সব দেশে শিশুদের শেখার অন্যতম মাধ্যম খেলনা জানিয়ে এসিআই পিএলসির প্রেমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিক লিমিটেডের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে ভালোমানের খেলনা তৈরি করতে গেলে ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এজন্য মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে মানসম্পন্ন খেলনা পৌঁছে দেওয়া জরুরি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খেলনা শিল্প প্লাস্টিক ও লেদারের পরেই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। প্লাস্টিক শিল্পকে পরিবেশবান্ধব রাখতে টক্সিক কেমিকেল ফ্রি উৎপাদন ও সহজ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এরইমধ্যে ৮৮টি দেশে প্রায় ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের খেলনা রপ্তানি করছে। বর্তমানে এই খাতে ১৪৭টিরও বেশি কারখানা রয়েছে, যেখানে ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এরই মধ্যে হয়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া বৈশ্বিক খেলনা বাজার ২০২৩ সালে ১০২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০৩২ সালে ১৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। চীন ধীরে ধীরে সস্তা খেলনা উৎপাদন থেকে সরে আসায় বাংলাদেশ নতুন সুযোগ পেতে পারে।