এনবিআরে ঢুকতে পারছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

আগারগাঁয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ভবনের ভেতরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে আসতে দিচ্ছে না। এ সময় এনবিআরের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনের বাইরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নিয়েছে। একই সঙ্গে রাজস্ব ভবনের গেটের বাইরেই নানা কর্মসূচি পালন করছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা ১২টার দিকে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢুকতে দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
তিনি বলেন, অর্থ উপদেষ্টা ডাকার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনায় বসবো। আমরা আইন মেনে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি। আমার অফিসে আমি কেন ঢুকতে পারবো না? আমরা কোনো প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থার তৈরি করি নাই। আমরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করি নাই, প্রকৃত বিষয় হচ্ছে আমাদের আলোচনায় ডাকা হয় নাই। আজ যাদের ডাকা হয়েছে কর ও কাস্টমস ক্যাডারের প্রতিনিধিদের। কিন্তু প্রতিনিধি মনোনয়ন দেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। তিনি তাদেরই মনোনয়ন দিয়েছেন যারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পাশাপাশি আন্দোলনকে নানাভাবে নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। আমাদের ডাকলে আমরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই যাবে।
এদিক অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে আগামী শনিবারের (২৮ জুন) লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউনের পাশাপাশি নতুন করে মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচির ডাক দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এই ঘোষণা দিয়েছেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বিসিএস (কর) ও সিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা বরাবরই আলোচনার পক্ষে। আলোচনার পক্ষে ছিলাম বলেই ২০ মে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করি। সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধিসহ ২৬ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুইজন প্রতিনিধিকে মোট ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়।
আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার পরও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে অর্থ উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান। অর্থাৎ আমাদের আলোচনার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। অন্যদিকে, তিনি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদের আজ বৃহস্পতিবার আলোচনার জন্য আহ্বান করেননি, চিঠিও পাঠাননি। সেহেতু এই আলোচনায় তারা অংশগ্রহণ করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কিছুক্ষণ আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনবিআরের একজন বিতর্কিত সদস্যের স্বাক্ষরিত সভার নোটিশ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দৃষ্টিগোচর হয়। এ নোটিশের মাধ্যমে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সভার প্রস্তুতি গ্রহণ করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একটি সভা আহ্বান করা হয়। তবে নোটিশটি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদকে পাঠানো হয়নি। কিন্তু মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। ধরে নেওয়া যায়, একদিন আগের তারিখ দিয়ে জারিকৃত এই সভার নোটিশটি একটি আই-ওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়। তদুপরি, ঐক্য পরিষদ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত কমিটির সঙ্গে আলোচনা করার কোনো সুযোগ নেই মর্মে ঐক্য পরিষদ মনে করে। এ অবস্থায় আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের মধ্য দিয়েই সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের যাত্রা শুরু হবে। এর আগে কোনো আলোচনা নয়।