মাহবুবউল আলম হানিফসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মাহবুবউল আলম হানিফসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ।
এদিন বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ নিয়ে শুনানি হয়। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন—অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
মাহবুবউল আলম হানিফ ছাড়া অপর তিন আসামি হলেন—কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান, দলটির জেলা সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা।
এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মাহবুবউল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি নতুন ফরমাল চার্জ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে। এর ওপর শুনানিও হয়েছে। তবে অপরাধ আমলে নেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে প্রসিকিউশন। আদালত আগামীকাল আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ফরমাল চার্জে আমরা মাহবুবউল আলম হানিফের ব্যাপারে কমান্ড রেসপনসিবিলিটির অভিযোগে এনেছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জুলাই আন্দোলনকারীদের জবাব দেওয়ার জন্য ‘ছাত্রলীগই যথেষ্ট’, সেখানে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ২৯ জুলাই কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বৈঠকের মাধ্যমে আন্দোলন দমনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া কুষ্টিয়া শহরে ছয়জনকে হত্যার দায়ে তার বিরুদ্ধে তিন নম্বর অভিযোগটি আনা হয়। এই তিনটি অভিযোগ প্রমাণের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণাদি দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। এসব পর্যালোচনা শেষে আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামিদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর পটপরিবর্তনের প্রথম সুযোগেই তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এ কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যখনই তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে, তখনই আদালতে উপস্থিত করা হবে। তারা উপস্থিত না থাকলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ছয়জন। একইসঙ্গে আহত হন বেশ কয়েকজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসানুল হক ইনু ও মাহবুবউল আলম হানিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। পরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।