সংলাপে ইসিকে যেসব পরামর্শ দিলেন শিক্ষাবিদ ও সুশীল প্রতিনিধিরা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আস্থা ফেরানো ও মব ভায়েলেন্স বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, যে ‘ভয়াবহ পরিস্থিতিতে’ বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়েছে, তাতে গতানুগতিক নির্বাচন করলে কী হবে তা ‘অনুমেয়’। তাদের পরামর্শ এমন, কোনো চাপের মুখে নতি স্বীকার করা যাবে না। একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মত না দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিনিধিদের অনেকে।
আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সকাল ও বিকেলের সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া পোস্টাল ভোটিংকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মন্তব্য করেছেন আমন্ত্রিতদের কেউ কেউ। অপতথ্য এবং এআইয়ের প্রভাব রুখতেও সজাগ থাকার কথা বলেছেন প্রতিনিধিরা। নির্বাচন সামনে রেখে প্রথমবারের মতো অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপে বসে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সকালে সুশীল সমাজ ও বিকেলে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। সংলাপে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদরা নানা রকম পরামর্শ দিয়েছেন।
সংলাপের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে এ সংলাপ ভূমিকা রাখবে আশা করি। বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাদের মতামত ইসির কাজকর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের টেকনোলজি মাইট ফেইল। সাইবার সিকিউরিটি মেবি এট স্টেক, হ্যাকিং হতে পারে। এ প্রশ্নগুলো কনসালটেন্টকে করেছিলাম। যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়, তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। যদি নির্বাচনের দিন আমাদের এটা হ্যাক হয়ে যায়, তারপর কী হবে। আর উই প্রিপায়ার্ড টু রেইজ দিস। যদি তারা সাইবার অ্যাটাক করে, ম্যালওয়ার ঢুকায়ে দেয়...যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভই সেইফ না, সেখানে আমার পোস্টাল ব্যালট কতটুকু সেইফ বুঝতে হবে। আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট মে রেইজ ডিবেটস। এটা পরের দিকে ডিবেট হতে পারে। ইট মে রেইজ লট অফ কোয়েশ্চেনস এজ ওয়েল। এটা আমরা জানি।
সবার সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, অনেক কাজ শেষ করেছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পাশাপাশি আইনি সংস্কার করেছি। সুষ্ঠুভাবে ভোট করার জন্য অনেক এগিয়ে গেছি। এ সংলাপ শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। দেরিতে সংলাপ শুরু করলেও ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করে ইসির কাজ হালকা হয়ে গেছে। যেটুকু গ্যাপ আছে সেটুকু আপনারা ফিলআপ করে দেবেন। প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিংয়ের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের ভেতরে ভোটে নিয়োজিত ১০ লাখের বেশি লোকবলের জন্য ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কর্মকর্তা, আইনে হেফাজতে থাকা লোক ভোট দিতে পারবে। যা এবার মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বিবিএসের তথ্য প্রশ্নবিদ্ধ, দেশের জনসংখ্যা এখন ১৯ কোটি
সংলাপে নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায়ই রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ। বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (বিবিএস) দেওয়া তথ্যকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলেও মন্তব্য করেন ইসি তাহমিদা। তিনি বলেন, জনসংখ্যা নিয়ে বিবিএসের ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ। একবার তারা যেটা প্রকাশ করল, পরে আবার সেটা কমিয়ে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।
সংলাপে তাহমিদা আহমদ বলেন, আমরা যে ভোটার তালিকা করলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে, সেখান থেকে তথ্যটা পেয়েছি। এটা একদম ঠিক তথ্য। আমাদের লোকসংখ্যা হলো ১৯ কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লাখ বাইরে, প্রবাসী যাদের বলা হয়।
সেফগার্ড মেজার নিয়ে মাঠে নামতে হবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ধরে নিতে হবে যে যারা হারবেন তারা অসন্তুষ্ট থাকবেন। শিষ্টাচার বলে কিছু যদি থেকে থাকে, সেটির উপর খুব ভরসা করা যাবে না। সুতরাং, আমাদেরকে সেফগার্ড মেজার নিয়ে পরিষ্কার মাঠে নামতে হবে। সেফগার্ড হচ্ছে যত বেশি সম্ভব ক্যামেরা আশেপাশে রাখা যায়। সেটি টেকনিক্যাল ব্যাপার, আপনারা ভালো বুঝবেন। সিসিটিভি বলুন বা সাংবাদিক বলুন, যত চোখ আপনার আশেপাশে রাখা যায়। এটা আপনাকে ধরে নিতে হবে যে এই ব্যাপারটি চ্যালেঞ্জ হবে এবং আপনার ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিছু ভেরিফিকেশন লাগবে। ডাকসু নির্বাচনে আমরা সাংবাদিকদেরকে পাশে পেয়েছি এবং প্রথম থেকে অনবরত তাদের সাথে কথা বলেছি। সবসময় সব কথা খুব সুখকর ছিল তাও না; কোনো কোনো ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিরক্তিকর কথাবার্তাও ছিল, কিন্তু তাদের সাপোর্ট ইনভ্যালুয়েবল হয়েছে আমাদের জন্য। পর্যবেক্ষকরা আমাদের জন্য লাইফ সেভার ছিলেন। বিশেষ করে বিভিন্ন দল, মত এবং মতাদর্শগত পার্থক্য আছে এমন পর্যবেক্ষক আমাদের সাথে থাকলে এবং তারা যদি পুরো প্রক্রিয়াটি খুব কাছ থেকে দেখেন, ভেরিফিকেশন করেন, তাদের এনডোর্সমেন্ট আমাদের খুবই কাজে লেগেছে।
ইসিকে উঁচু নৈতিক মানদণ্ডে দেখতে চাইবে মানুষ
সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, এ নির্বাচনে বড় চালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয় হচ্ছে সফলভাবে নির্বাচন করা। দেশের জন্য এটা ট্রানজিশন, এর সফলতার উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। ৭০ এর নির্বাচন যেমন টার্নিং পয়েন্ট ছিল, এবারের নির্বাচনটিও টার্নিং পয়েন্ট হবে। তিনি বলেন, ইসিকে উঁচু নৈতিক মানদণ্ডে দেখতে চাইবে মানুষ। দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন মানুষের প্রত্যাশা। কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন ও দক্ষ করতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত যেন নিতে পারে। এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। গেল ১৫ বছরে ‘ভায়োলেন্স নরমালাইজেশন’ হয়ে গেছে। এবারের নির্বাচনে ক্যাম্পেইন সোশাল মিডিয়ায়, অনলাইনে হবে ৮০ শতাংশ। এটার জন্য ইসি কতটুকু প্রস্তুত? মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, এআই জেনারেটেড তথ্য আসবে। নির্বাচনের আগেই অনেক উত্তেজনা বাড়াবে সোশাল মিডিয়া।
ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি
রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেছেন, পারস্পরিক সম্মান এবং বিদ্বেষমুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব। রাজনৈতিক শিষ্টাচারের অভাব আমরা প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করি। অনেক সময় এমন বক্তব্য প্রচারিত হয়, যা কোনোভাবেই রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহন করে না। আগে হয়তো এমন মন্তব্য হতো, কিন্তু এত ধরনের মিডিয়া না থাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ত না। এখন সামাজিক মাধ্যমে এগুলো বহুগুণিত হয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। নির্বাচনের প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত—সবক্ষেত্রেই গণমাধ্যমের সঠিক ভূমিকা জরুরি।
কমিশনকে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দিতে হবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌসের ভাষ্য, ৫৪ বছরেও ক্ষমতার ট্রানজিশন কেমন হবে তা আমরা ঠিক করতে পারিনি। তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি আপনারা দেখেছেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিণতি আপনারা দেখেছেন। আইন শৃঙ্খলায় পুলিশের আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কমিশনকে স্বাধীনভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দিতে হবে। যদি সাহসী হতে পারেন, সত্যি মেরুদণ্ড থাকে তাহলে স্বাধীন হতে পারবেন। স্বাধীন হলে জাতিকে সুন্দর ও ভালো নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন।
দলীয় সরকারের অধীনে এ ইসি নয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, গেল ১৫-২০ বছরে প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের কার্নিশে। যার যা খুশি করেছেন। এমন ভায়বহ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারলে ইতিহাসের পাতায় ইসির নাম লেখা থাকবে। বিগত সময়ে রাতের ভোট, ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের ইসির বিরুদ্ধে ‘তেমন অভিযোগ নেই’। এটা বড় শক্তি। দলীয় সরকারের অধীনে এ ইসি নয়। এখনকার নির্দলীয় সরকার। এ সরকারের কোনো দল নেই। আমলাদের বাইরে রেখে নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পিআর ভোট পদ্ধতি সচেতনতা সৃষ্টি না করে কোনোভাবে পদ্ধতিটির পক্ষে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শাপলা প্রতীক নিয়ে এনসিপির দাবির বিষয়টি ইঙ্গিত করে মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ইসি যে প্রতীক দেয় সে প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিশেষ মার্কা না দিলে ভোটে রাজি না এমন দাবি- এটা ঠিক না। স্বাধীন ইসির নিজস্ব এখতিয়ার এটা। ইসিকে চাপ দেবেন না। মার্কা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো অধিকার নেই। স্থানীয় নির্বাচন না করে জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
নির্বাচনি ব্যয় তদারকি ও প্রকাশের বিষয়ে ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ
আরপিও সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাবনার বিষয়ে ভিন্নমত দিয়ে টিআইবি পরিচালক বদিউজ্জামান বলেছেন, হলফনামার তথ্য যাচাই বাছাইয়ের কার্যকর ব্যবস্থা ও আচরণবিধি প্রয়োগের ‘দুর্বলতা রয়েছে’। নির্বাচনি ব্যয় তদারকি ও প্রকাশের বিষয়ে ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ‘না’ ভোটের বিধান শুধু একক প্রার্থীর আসনে নয়, সব আসনে ব্যবস্থা রাখা জরুরি। নারী মনোনয়ন বাড়াতে দলগুলোর প্রতিশ্রুতি ও প্রচারণায় তহবিল করার অনুরোধ করেন তিনি।
নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, ভোটের আগে-ভোটের সময় ও পরে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর বিষয়ে প্রচণ্ড রকম ক্ষোভ রয়ে গেছে। ৫১ শতাংশ নারী, অথচ আসন ৫-৭ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব। আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সব আসনে ‘না’ ভোট চালুর পক্ষে মত দেন তিনি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) সিস্টেমের জন্য আমাদের এখানে যে জিনিসটা দরকার সেটা এখনো বাংলাদেশ সেটার জন্য প্রস্তুত না।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো আব্দুল ওয়াজেদ অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন। তিনি বলেন, এ সরকারের ভিন্ন ক্যারেক্টার রয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান বলেন, ভোটের আগে বাহিনীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হবে।
অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানউজ্জামান বলেন, ‘আস্থা অর্জনই প্রধান সমস্যা’। এটা তৈরি করা ইসির প্রধান দায়িত্ব। আইনানুগভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসিকে প্রমাণ করতে হবে, নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন করতে হবে। ভুয়া তথ্য রোধে ইসিকে বড় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান শাপলা প্রতীক কোনো দলকে না দেওয়ায় ইসির কঠোর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি জানান, মেরুদণ্ড শক্ত-মেরুদণ্ডহীনের কথা বলেছে অনেকে, সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটানো গেলে ভালো নির্বাচন দিয়ে ইসি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকতে পারবেন।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে কি না, এটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, এই কমিশন মনে করে কি না যে বর্তমান সরকারের আমলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করা সম্ভব? যদি মনে করে, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে পরবর্তী নির্বাচনের দায় নিতে হবে।
নির্বাচন কমিশন কিছু কিছু বিতর্ক এড়াতে পারত উল্লেখ করে সোহরাব হাসান বলেন, একটা পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধরে নিলাম, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে বসেছে, তাদের মধ্যে যদি কেউ মনে করেন যে পরিস্থিতি অনুকূলে নয় বা আমরা জিতব না, সুতরাং আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম। তাহলে কী পরিস্থিতি হবে, আপনারা ভেবে দেখুন।