নির্বাচনে ফাউল আটকাতে সব ব্যবস্থা নেব : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বড় স্টেকহোল্ডার রাজনৈতিক দল। যাদের সহযোগিতা আসলে সবচেয়ে বেশি জরুরি। তাদের পক্ষ থেকে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর বার্তা এসেছে। তবে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ফাউল আটকাতে সব ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে সিইসি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, দেখেন রাজনৈতিক দল হলো আমাদের মূল স্টেকহোল্ডার। এতে কোন সন্দেহ নেই। উনাদের সহযোগিতা ছাড়া সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কিছুদিন আগে আমার দেশ পত্রিকায় সম্পাদক মহোদয় একটা মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলেন। আমি খুব লাইক করেছি। উনি বলছেন যে সব খেলোয়াড়রা যদি ফাউল করার নিয়ত যদি মাঠে নামে, তাহলে তো মুশকিল।
নাসির উদ্দিন বলেন, সব খেলোয়াড়রা যদি এই ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামে তাহলে রেফারির পক্ষে তো এই ম্যাচ রক্ষা করা সম্ভব না। সুতরাং খেলোয়াড়দের তো ফাউল করার নিয়ত থেকে একটু দূরে থাকতে হবে। যারা খেলবেন তারা যদি ফাউল করার নিয়তে সবাই নামেন মাঠে, তাহলে একটা মুশকিল। কিন্তু যাতে ফাউল না করতে পারেন তার তার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা নিব ইনশাআল্লাহ।
সিইসি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমাদের যারা স্টেকহোল্ডার, যারা ইলেকশনের মাঠে খেলবেন তারা, সব ফাউল করার নিয়তে নামবেন না। তারা একটা সুন্দর নির্বাচনের নিয়তেই নামবেন এবং এবং তারা একটা ভালো নির্বাচনের নিয়তে নামবেন এই বিশ্বাস আমার আছে। কারণ এটা বিশাল একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা কিন্তু এই অবস্থায় আছি। একটা ক্রান্তি লগ্নে আছি। উনারা সবাই জানেন। আমাকে কেউ এ পর্যন্ত বলেন নাই যে আমি ফাউল খেলার নিয়তে ইলেকশনে যাব। যে ইলেকশনে ভোট ডাকাতি করব, সন্ত্রাস করব, এমন কেউ কোন রাজনীতিবিদ বলেন নাই।
নাসির উদ্দিন বলেন, গভর্মেন্ট তো রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আপনারা দেখছেন কনসেন্স কমিশনের তো আবার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে এক মাস। উনারা একটা সমঝোতায় আসতে চাচ্ছেন। সুতরাং আশা করি, ইনশাল্লাহ একটা সমঝোতায় আসবেন।
সিইসি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যাতে হয় সবাই যাতে সুন্দরভাবে খেলতে পারে, সেই সে ব্যবস্থাটা করে দেব ইনশাল্লাহ এবং সর্বশক্তি নিয়োগ করব। আপনারা আজকে দেখেছেন বোধয় আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন এক লাখ আর্মি মাঠে থাকবে। আপনারা তো দেখছেন আর্মিকে আমরা ল-ইনফোরস এজেন্সি ইনক্লুড করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। সুতরাং আমি কিন্তু খুব কনফিডেন্ট। আর্মি কিন্তু মুখের কথা না। ইনশাল্লাহ যে ভয় আপনারা পাচ্ছেন সেই ভয় করার কোনো কারণ নেই।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা হবে কিনা, এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, সেটা সময় আসুক দেখি। আমরা শুরুতো করি নাই। এজন্য আমরা রাজনৈতিক দলের সাথে একটু পরে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সিভিল সোসাইটি, ওমেন রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউনিভার্সিটি টিচার্স, মিডিয়া পার্সোনালিটিস, এখন উনাদের দিব। শেষের দিকে রাজনৈতিক দল নিয়ে সংলাপে যাব। আপনারা বলছেন, রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। দেখি না একটা কোন পর্যায়ে আসে। দেখি একটু অপেক্ষা করুন।
কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে, এ প্রশ্নে সিইসি বলেন, ভোট তো আমাদের আরপিওতে যা আছে সে পদ্ধতিতে হবে। পিআরটা তো আরপিওতে নাই। আমার সামনে তো আরপিও। আমাকে যদি আরপিওটা বদলাইয়া দেয়, আইন না বদলাইলে তো পারি না।
যদি কোন কারণে পিআর পদ্ধতিতে ভোট হয়, সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা যাওয়া সম্ভব হবে কিনা? এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, আইন বদলাইতে হবে। আরপিও বদলাতে হবে। আরপিওতে তো সিস্টেম আছে। সংবিধানও চেঞ্জ করে ফেলতে হবে। আরপিও বদলাইতে হবে। আমরা তো ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের তো অপেক্ষা করার কিছু নাই। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সংসদীয় পদ্ধতিতে ভোট হবে।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে সিইসি বলেন, আমরা বিদেশিদের নিয়ে আসব না। উনারা অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যত আসতে চায়, আসুক। লোকাল পর্যবেক্ষক বেশি করে দিতে চাই। আমরা তো ট্রান্সপারেন্ট হতে চাই। বিদেশিরা যদি কেউ এসে দেখতে চায়, মোস্ট ওয়েলকাম। আমাদের কাছে অনেকেই যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আমরা বলছি যে আলহামদুলিল্লাহ আসেন। দেখেন আমাদের এখানে লুকানো চাপানোর কিছু নাই। আমরা একদম ট্রান্সপারেন্ট একটা ইলেকশনের উপহার দিতে চাই। সুতরাং আমাদের ভয়ের কোন কারণ নাই।