পটুয়াখালীতে দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে, দায়ী অতিরিক্ত কীটনাশক

পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলায় ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। বর্ষার সময়ে এসব বিষাক্ত পদার্থ বৃষ্টির পানির সঙ্গে নদী-নালা ও খালে মিশে পানির জীববৈচিত্র্য নষ্ট করছে, যা মাছের প্রজনন ও জীবনচক্র ব্যাহত করছে।
স্থানীয় মৎস্য শিকারী ও সচেতন মহল জানান, একসময় এই অঞ্চলের খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত, কিন্তু এখন আর সেই মাছের দেখা মেলে না। পুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা, টাকি, চিংড়ি, বাইম, বেলে ও গজার মাছের মতো দেশীয় প্রজাতির মাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির মুখে।
বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, এই মাছগুলো এখানকার মানুষের ঐতিহ্য ও জীবিকার সঙ্গে জড়িত। তিনি জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদে উৎসাহ এবং টেকসই কৃষিনীতি গ্রহণের ওপর জোর দেন, নাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই মাছগুলো পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, রাসায়নিক পদার্থের কারণে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। মৎস্য অধিদপ্তর এসব মাছ ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, অধিক উৎপাদনের আশায় কৃষকরা রাসায়নিক ব্যবহার করছেন। তবে কৃষি বিভাগ কৃষকদের কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে গাছের ডাল পুঁতে রাখা, আলোক ফাঁদ তৈরি এবং নিম ও মেহগনি পাতার রস ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ, জলাশয়ে পানি সংকট, অভয়াশ্রমের অভাব এবং অবৈধ জালের ব্যবহার মাছ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসন অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে এবং মৎস্য আইন বাস্তবায়নে কাজ করছে।