জামায়াতের ব্যাংক হিসাব নম্বর জমা দিতে হবে ইসিকে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের ব্যাংক হিসাব নম্বর ও ব্যাংকের নাম জমা দেয়নি নির্বাচন কমিশনে। যদিও দলটি জুলাই অভ্যুত্থানের বছরের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্ত অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব নম্বর ও ব্যাংকের নাম দিতে হয় নির্বাচন কমিশনে।
জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল গত ৩১ জুলাই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব জমা দেয়। তাতে দেখা গেছে, এই নিবন্ধন ফিরে পাওয়া এই দলটি অভ্যুত্থানের বছরে আয় আর ব্যয়ের হিসাবে সব দলকে ছাড়িয়ে গেছে।
জামায়াতের ব্যাংক হিসাব নম্বর নিয়ে জানতে চাইলে গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছিলেন, সম্প্রতি দলটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন দিয়েছে। তাতে দলটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। পাশাপাশি নিবন্ধন ফরমে শর্তে বলা রয়েছে- দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর লাগবে। জামায়াতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর না থাকার বিষয়টি ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে কমিশনে এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি আমাদের দলের অর্থ বিভাগ দেখভাল করেছে। অ্যাকাউন্ট নম্বর না থাকার ব্যাপারে খোঁজ নেব।
অন্যদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দলের সিইসির সাথে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে জামায়াত।
দলটি বলছে, কর্মীদের চাঁদা থেকেই তারা আয় করেছে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। আর কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে গিয়েই তাদের সবচেয়ে বেশি, সাড়ে ৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আয়ের এই অংক বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির প্রায় ১১গুণ বেশি।
গতবছরের হিসাবে জামায়াত স্থিতি দেখিয়েছে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার ১২২ টাকা। আর ২০২৪ সাল তারা শুরু করেছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা স্থিতি নিয়ে। সে হিসেবে ২০২৫ সালের শুরুতে তাদের তহবিলে স্থিতি ছিল ১৫ কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ৩১৩ টাকা।
প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন (অডিট রিপোর্ট) জমা দেওয়ার বাধ্যবাধতকা রয়েছে।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ২৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিজেদের নিরীক্ষা প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। যারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে ও অডিট রিপোর্ট জমা দেয়নি তাদের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। ইসির নিজস্ব উদ্যোগে অডিট রিপোর্ট এখনও যাচাই না করায় তথ্য চেয়ে এখনও চিঠি দেওয়া হয়নি।
ইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম জানিয়েছেন ২৯টি দল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে; ১০টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। আর ১১টি দল প্রতিবেদন জমা দেয়নি। যারা নির্ধারিত সময়ে জমা দেয়নি এবং যারা সময় চেয়েছে, তাদের ব্যাপারে কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে দলগুলোর কাছে তথ্য চাইবে এবং তার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে।