বরিশালে মারধর করে অনশনকারীদের হাসপাতাল ছাড়া করল কর্মচারীরা

স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের দাবিতে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের মারধর করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বেড় করে দিয়েছে কর্মচারীরা। এসময়ে আন্দোলনের মূল সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন রনিকে মারধরের জন্য খুঁজতে দেখা গেছে। যদিও কর্মসূচি ঘোষণা করে অনশনস্থলে আসেনি মহিউদ্দিন রনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের সামনে বান্দ রোডে বিক্ষোভ মিছিল করেন নার্স, টেকনিশিয়ান এবং হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজনকে মারধরের পর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
আন্দোলনের মুখপাত্র নাভিদ নাসিফ বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকে গণঅনশন ছিল। কর্মসূচিতে আন্দোলনকর্মীরা হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থান করছিলেন। আমরা দেখেছি হাসপাতালের এপ্রোন গায়ে কর্মচারী-নার্স-টেকনিশিয়ানরা এক রোগীকে মারধর করেন এবং তার স্বজনদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরপরে তারা অনশনে থাকা আন্দোলনকর্মীদের ওপর হামলা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আজাদ বলেন, হাসপাতালের কর্মচারীরা একজনকে মারধর করেছে। এরপর তারা স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনকে অবৈধ বলে মিছিল স্লোগান দিতে থাকেন। তারা স্লোগান দিচ্ছিল, হৈ হৈ রই রই, রনি তুই গেলি কই, রনির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে, রনি কই রনি কই ইত্যাদি স্লোগানে হাসপাতাল কম্পাউন্ড ছাড়াও মূল সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছে। সেখান থেকে ফিরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বেদম মারধর করেছে।
এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিক হামলাকারী কর্মচারীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি অফিসের মধ্যে আছি। কারো ওপরে হামলা হয়েছে কিনা সেই তথ্য আমার জানা নেই।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. কে. এম. মশিউল মুনীরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার বরিশাল সফরে আসের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়া হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলন করে জনভোগান্তি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিবে। ঘোষণার একদিন পরেই আন্দোলনকারীদের ওপর হাসপাতালের কর্মচারীরা হামলা চালালো। এর আগে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে টানা ১৭ দিন ধরে আন্দোলন চলছিল। ছাত্র-জনতার ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিল।