১০ ঘণ্টা পর পাবনার পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার

রাজশাহীর বানেশ্বরে বিআরটিসি বাস শ্রমিক কর্তৃক মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে পাবনা থেকে সব রুটে ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রায় ১০ ঘণ্টা পর আজ বুধবার (১৩ আগষ্ট) বিকেল ৪টার দিকে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার ঘোষণা করেন পাবনা মোটর মালিক শ্রমিক ইউনিয়নসহ কয়েকটি সংগঠন।
এর আগে ভোর ৫টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলার সব রুটে পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হয়।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফিরোজ খান ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভোর থেকেই সব পরিবহণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সকালে পাবনার রাজপথে সব শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এরপর জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের সবাইকে ডেকেছিলেন। তিনি এসব সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসে আমরা সব ধরনের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।
ফিরোজ খান আরও বলেন, বিকেলে তিনটা সড়কে সব পরিবহণ চলাচল করছে। আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের প্রতি আস্থা রেখেছি। তিনিই আমাদের শেষ ভরসা। এরপরও যদি আমরা বিচার না পাই তাহলে আবারে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পাবনা বিআরটিসি বাস সরকারি সঠিক নিয়মে চালায় না। তারা লিজ দিয়ে চালায়। সড়কে ইচ্ছেমত চলাচল করে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। আমরা বাস মালিকরা কিন্তু সঠিক নিয়মে রাস্তায় চলি। আমাদের সঠিক নিয়ম যদি তাদের ভালো না লাগে যদি মাঝেমধ্যেই আমাদের শ্রমিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করে। এরপরও যদি এমন ব্যবহার বা শ্রমিকদের মারধর করা হয় তাহলে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যা হয় তাই করা হবে।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে দাশুড়িয়া মোড় থেকে মাই লাইন পরিবহণে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি বাসের শ্রমিক ও আরেকটি বাসের একজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর নাটোর গিয়ে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এছাড়া রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা।
এ ঘটনায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে জানালে বিষয়টি রাতে মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন মোটর শ্রমিকের নেতারা। এ ঘটনায় রাত ৮ টার দিকে মিমাংসা করতে বসে আছেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। এমন সময় বিআরটিসি বাসের শ্রমিকরা লাঠিসোটা ও জিআই পাইপ দিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন পাবনা কার্যালয়ে হামলা করে। এরপর বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবহণ বন্ধ রাখা হয়। দোষীদের বিচারের দাবিতে পাবনা শহরের শহীদ চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের পাবনার শ্রমিকরা বিআরটিসি শ্রমিকদের দ্বারা মারধরের শিকার হবে। আবার শাহজাদপুর বাস শ্রমিকদের হাতে মার খাবে এটা এখন নিত্যদিনের রুটিন হয়ে গেছে। পরিবহণ সেক্টরে সরকারি নজরদারি দরকার। এমন চলতে থাকলে ক্ষয়ক্ষতির দায় কে নেবে। পাবনার কোনো শ্রমিকের গায়ে হাত তোলা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা স্থায়ী সমাধান দাবি করছি।
পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, সব শ্রমিক সংগঠনকে ডেকেছিলাম। কার্যকরী আলোচনা ও সমাধান হয়েছে। বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আশা করি জেলা প্রশাসন সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছে সামনেও থাকবে।