আশুগঞ্জ-আখাউড়া মহাসড়ক প্রকল্পের কাজে ধীরগতি, ভোগান্তি চরমে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেন মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। পাঁচ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল, শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুন মাসে। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে মহাসড়কে চলাচলকারী লাখ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
গত বছর আগস্টে সরকার পতনের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনের ভারতীয় কর্মীরা নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশে ফিরে যান। এরপর নভেম্বরে তারা কাজে ফিরলেও কচ্ছপ গতিতে কাজ চালাচ্ছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি মালামাল চুরি ও অন্যান্য সমস্যার কথা জানিয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে আরও দুই বছরের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত। এর মধ্যে দ্বিতীয় প্যাকেজে সরাইল থেকে তন্তর অংশে অর্ধেক কাজ হলেও, তৃতীয় প্যাকেজে তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর অংশের কাজ একেবারেই হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, কাদা ও পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ঘন ঘন যানজট, দুর্ঘটনা ও অতিরিক্ত সময় নষ্ট হওয়ায় সাধারণ যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ।

তন্তর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি লোকমান খন্দকার বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে।
ট্রাকচালক জাকির জানান, তারা ইচ্ছে করে এই সড়ক ব্যবহার করেন না, কারণ এতে প্রায়ই গাড়ির চাকা দেবে যায় ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা বশির আহমেদ বলেন, সরকারের উচিত ভারতীয় ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ নিয়ে দেশীয় ঠিকাদার দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করা।
আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বলেন, প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ জুনে শেষ হওয়ায় আরও দুই বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে দুটি প্যাকেজের কাজ চলছে, তার মধ্যে সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আমরা সেগুলো মেরামত করে চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা করছি। তিনি আরও জানান, তন্তর বাজারেও তারা মেরামতের কাজ করেছেন।