ইলিশের হাঁকডাকে মুখর চাঁদপুর মাছঘাট

ইলিশের হাঁকডাকে মুখর চাঁদপুর মাছঘাটের পরিবেশ। ভিড়ছে ট্রলার, শ্রমিকরা ট্রলার থেকে ঝকঝকে রুপালি ইলিশ নামিয়ে আতড়তের সামনে স্তূপ করে রাখছে। সেই স্তূপ থেকে ক্রেতা- বিক্রেতাদের কাছে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের দম ফেলার যেন ফুরসত নেই।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ঘাটে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে অনেকটা। আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) একদিনেই ঘাটে এসেছে প্রায় ৮০০ মণ ইলিশ। এতে কেজিতে দাম কমেছে প্রায় ২০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়, আর ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ মিলছে এক হাজার ৬০০ টাকায়।
তবে আশ্চর্যের বিষয়, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ধরা ইলিশের পরিমাণ খুবই কম। ঘাটে আসা বেশিরভাগ ইলিশই এসেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চল- হাতিয়া, সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন উপকূল থেকে। ফলে স্থানীয় জেলেদের জালে ধরা ইলিশ বাজারে তেমন দেখা যাচ্ছে না। যার কারণে দাম বেশি একটা কমছে না।
ক্রেতারা বলছেন, দাম কিছুটা কমায় ইলিশ কেনা এখন কিছুটা সহজ হয়েছে, তবে দাম আরও কমলে তারা বেশি পরিমাণে কিনতে পারতেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমেছে, আর এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই সন্তুষ্ট।
গাজীপুর থেকে ইলিশ কিনতে আসা ফরিদুল হাসান বলেন, চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে প্রথমবারের মতো ইলিশ কিনতে এসেছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল ঢাকার তুলনায় এখানে ইলিশের দাম একটু কম হবে। তবে পুরো আড়ত ঘুরে আমাদের ধারণা পাল্টে গেছে। মাছ ঘাটে পর্যাপ্ত ইলিশ আছে তবে দাম আরও কিছুটা কমলে ভালো হতো।
অনলাইনে ইলিশ বিক্রেতা জোবায়ের হাসান বলেন, অনলাইনে যারা মাছ কিনেন তারা সাবধান থাকুন। কারণ অনলাইনে ইলিশ কিনে বেশিরভাগ ক্রেতাই প্রতারিত হন। আপনারা ঘাটে আসবেন, না হয় বিশ্বস্ত মানুষ দ্বারা ইলিশ কিনবেন। অনলাইন প্রতারকদের জন্য মাছঘাটে ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
ইলিশ বিক্রেতা নবীর হোসেন ও কামাল হোসেন বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, ইলিশের সরবরাহ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে চাঁদপুর মাছঘাটে ট্রলার আসছে। যা ইলিশের পুরো সিজনে দেখা যায়নি। মূলত দক্ষিণাঞ্চলের ট্রলার এলেই সরবরাহ বাড়ে ইলিশের। মাছঘাটে বেশরভাগ ইলিশ দক্ষিণাঞ্চলের। চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার ইলিশ তুলনামূলক কম ধরা পড়ছে। যার কারণে স্থানীয় বাজারে চাঁদপুরের ইলিশের দাম কমেনি। সামনে আরও বেশ কিছুদিন সময় আছে, আশা করি তখন ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়বে, দামও কমে আসবে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার জানান, জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে কিছুটা ইলিশ আসতে শুরু করে। তবে কিছুদিন এসে সরবরাহ আবার তলানিতে নেমে আসে। যার কারণে ইলিশের দাম আশানুরূপ কমছে না। আগস্ট মাসের শুরু থেকে ইলিশের সরবরাহ যেভাবে বাড়ছে, এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দাম কমার সম্ভাবনা আছে।