নওগাঁয় ট্রিপল মার্ডার মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

নওগাঁর পোরশায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে ট্রিপল মার্ডার মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলার আরও আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। খালাস দেওয়া হয় চারজনকে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁ অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক মোহাম্মদ ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ এর অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাব্বির আহমেদ।
রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন পোরশা উপজেলার কালাইবাড়ি গ্রামে আবু বক্কর সিদ্দিক (পলাতক),আমির আলী ও আব্দুল কাদির ওরফে কাদের।
এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন দুরুল হুদা (পলাতক),আলিম ওরফে আলম, আবুল কাশেম ও ওয়াজেদ আলী। তাদের প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া এ মামলায় তরিকুল ইসলাম, রেজাউল করিম ও আবুল কালামকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ে খালাস প্রাপ্তরা হলেন মোসা. মরিয়ম বিবি, কামেলা বেগম, কহিনুর বেগম ও রফিকুল ইসলাম।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট পোরশা উপজেলার কালাইবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ আম বাগানে কাজ করছিলেন। সকাল ৭টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন তার আম বাগানে এসে অবৈধভাবে জায়গা দখলে নিতে চায় এবং কিছু আম গাছ উপড়ে ফেলে। এ সময় আব্দুস সামাদের স্ত্রী, ছেলে, ভাই এবং বোনেরা এগিয়ে এলে আসামিরা তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রথমে তিনজন এবং পরে আরও পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সামাদের ভাই শফিকুল ইসলাম, বোন সেলিনা এবং তার মেয়ে নার্গিস মারা যায়। এ ঘটনায় আব্দুস সামাদ ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট পোরশা থানায় বাদী হয়ে ২৬ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ মামলায় ২০ সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বুধবার এ রায় দেন বিচারক।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজরিন নাহার উচ্চ আদালতে রায়ের পক্ষে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।