ভোটের ‘ক্লিয়ার পিকচার’ আগস্টের প্রথম সপ্তাহে

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সাথে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনও বলা যায় এখন পুরোপুরি নির্বাচনি ট্রেনে উঠে গেছে। তবে ঠিক কখন সেই নির্বাচন বা ভোট, তা নিয়েই চলছে যত জল্পনা-কল্পনা। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করতে সরকারের পরামর্শের অপেক্ষায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটির অনুমান— আসন্ন আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই সরকারিভাবে নির্বাচনের একটি ‘ক্লিয়ার পিকচার’ পাবে ইসি। তারপর নির্বানের তফসিল সংক্রান্তে চিন্তাভাবনা শুরু করবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। যদিও এরইমধ্যে নির্বাচনের দিকে জোরেশোরে হাঁটছে ইসি। আজ বুধবার ইসির একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার মনে হয়, অল্প কিছুদিনের ভেতরে নির্বাচনের একটা ‘ক্লিয়ার পিকচার’ রাষ্ট্রীয়ভাবে আসবে, সরকারিভাবে আসবে। আসার পরিপ্রেক্ষিতে, তখন আমরা…।’
এই অল্প কিছুদিন কি আগামী মাসের (আগস্ট) প্রথম সপ্তাহের মধ্যে? এ প্রশ্নে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ফার্স্ট উইকের (প্রথম সপ্তাহ) ভেতরে, আমার অনুমান।’
আওয়ামী আমলে অনুষ্ঠিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্টের তকমা নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। তারপর হাবিবুল আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের পর নতুন কমিশন গঠিত হয়। তারপর থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সব কাজ করে যাচ্ছে এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশন।
ইসির একাধিক কর্মকর্তার ধারণা, আগামী বছরের (২০২৬) ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে কর্মকর্তাদের কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি।
অন্যদিকে কেউ কেউ ধারণা করছেন, আগামী ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে ভাষণে তিনি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারেন।
এই যখন অবস্থা তখন বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাঠে সক্রিয়। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সারা দেশে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে। জামায়াতও প্রায় সব আসনে তাদের প্রার্থী ঠিক করছে। আর বিএনপি শুরু থেকেই সরকারের কাছে নির্বাচন দাবি করে আসছে। এ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচন নিয়ে বেশ সক্রিয়।
তবে, আগামী সংসদ নির্বাচনে কতটি দল অংশ নেবে, এখনও তা নির্ধারণ হয়নি। ইসির নিবন্ধিত ৫৫টি দল রয়েছে। এর মধ্যে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী জোটের কোনো দল রাজনীতির মাঠে সক্রিয় না। অন্যদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৪৪টি নতুন রাজনৈতিক দল ইসির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে।