মৃত্যুর ৪ বছর পর নির্দোষ প্রমাণিত সাবেক মেয়র কামাল

মৃত্যুর চার বছর পরে উচ্চ আদালতের রায়ে দুর্নীতির মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র ও বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব কামাল।
বুধবার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর একক বেঞ্চে দেওয়া এ সংক্রান্ত রায়ে কামালসহ পাঁচ আসামিকেই বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এই মামলায় কামালের জামিন বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া ৫০ লাখ টাকা তার পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আহসান হাবিব কামালকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বরিশালের তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আট মাস কারাগারেও ছিলেন তিনি।
বিসিসির মেয়র থাকাকালে ১৯৯৫ সালের একটি ঘটনায় ২০০৯ সালে আহসান হাবিব কামালসহ সাতজনের রিরুদ্ধে ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই মামলায় ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর দেওয়া রায়ে কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা জরিমানা করেন বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। তখন এই রায়ে মামলার সাত আসামির মধ্যে দুজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন সাবেক মেয়র কামাল। কারাগারে থাকা অবস্থায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হলে ৫০ লাখ টাকার জামিননামায় তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন বিচারপতি। নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পরও কামালের মুক্তি পেতে চার মাসেরও বেশি সময় লেগে যায়।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ জুলাই মারা যান সাবেক মেয়র কামাল। এদিকে, উচ্চ আদালতে চলমান মামলার রায়ে বুধবার কামালসহ আপচ আসামিকে বেকসুর খালাস ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় পর্যালোচনা ও ২০ জন সাক্ষীর দেওয়া সাক্ষ্য বিবেচনায় নিয়ে এ রায় দেন বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।
কামালের পক্ষের আইনজীবী বারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী জানান, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ বিসিসির তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় মামলা করে দুদক। কিন্তু মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হলেও তাকে আসামি করা হয়নি।
এ ছাড়া, সড়ক ও জনপদের একজন প্রকৌশলীর তদন্তে আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি করেছিল দুদক। কিন্তু সেই নির্বাহী প্রকৌশলী উচ্চ আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিচার বিশ্লেষণ করে বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এ কারণে কামালের মৃত্যুর চার বছর পরে ঘোষিত উচ্চ আদালতের রায়ে কামালসহ পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ৩০ জুলাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আহসান হাবিব কামাল। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।