অবিলম্বে তথ্য ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের আহ্বান টিআইবির

অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর পার হতে চললেও তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি এটিকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সরকারের অবহেলা বলে অভিহিত করেছে এবং অবিলম্বে কমিশন দুটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
আজ বুধবার (২৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন হলো সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। অথচ এক বছর হতে চললেও এই দুটি কমিশন গঠনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশন দুটি অতীতে যত অকার্যকরতারই পরিচয় দিক, প্রায় এক বছর নেতৃত্বশূন্য রাখার বিব্রতকর রেকর্ড স্থাপনের পাশাপাশি সরকার তার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও মানবাধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতির প্রতি নির্বিকার অবহেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, এই দীর্ঘ শূন্যতা শুধু দুঃখজনক নয়, বরং রাষ্ট্রসংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য ম্যান্ডেটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে নাগরিকদের তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং মানবাধিকার নিশ্চিতের সুযোগ ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সরকার কি তার মেয়াদে তথ্য প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষের প্রতিকার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ রাখতে চায়?
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, প্রায় এক বছর ধরে তথ্য কমিশন না থাকা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, বরং তথ্যপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকারকে উপেক্ষা করার শামিল। এতে সরকারি তথ্য না পেলে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে আছে। তিনি বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতের যে প্রতিশ্রুতি জানিয়েছিল, তা মূলত ফাঁকাবুলিতে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের শূন্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ে মানবাধিকার কমিশন শুধু একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান ছিল। সেই সরকার পতনের পর মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালীভাবে দায়িত্ব পালন করবে এমন প্রত্যাশা থাকলেও, বাস্তবতা আরও হতাশাজনক হয়েছে। তিনি এই দীর্ঘ ব্যর্থতাকে দেশে মানবাধিকার নিশ্চিতে সরকারের সদিচ্ছার ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করেন। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তখন নিজস্ব কমিশন শূন্য রাখা দ্বিচারিতার পরিচায়ক।
টিআইবি তাদের বিবৃতিতে অবিলম্বে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের পাশাপাশি উভয় কমিশনের কার্যক্রমকে স্বাধীন, দক্ষ ও জনগণের আস্থাযোগ্য করার লক্ষ্যে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছে।