সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ ৪ বছর, ভোগান্তিতে পাঁচ গ্রামের মানুষ

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার দক্ষিণ ঠাকুরদাস এলাকায় মরা তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের পাঁচ গ্রামের মানুষ। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ অর্থাভাবে এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি।
চর চতুরা, মায়ার চর, চর উত্তর ঠাকুরদাস, চর পল্লীমারী ও চর নাজিরদহ গ্রামের মানুষ বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে নানা দুর্ভোগে পড়ছেন। বর্ষায় কলার ভেলা ও ডিঙি নৌকায় পার হতে হয়, আর শুষ্ক মৌসুমে হাঁটু কাদা ও পানি মাড়িয়ে চলতে হয়।
পৌরসভার প্রকৌশল দপ্তর জানায়, ৭৬ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে ২০১৯ সালে প্রথম ধাপে ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একাংশের কাজ পায় মেসার্স মামুন কনস্ট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ৮০ ভাগ কাজ করে থেমে যায়। পরে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে দ্বিতীয় ধাপে ২৯ লাখ টাকায় স্ল্যাব, বিম ও রেলিং নির্মাণের কাজ পায় নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজ। তারাও ২০২১ সালে ৫০ ভাগ কাজ করে বন্ধ রাখে।
নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নুর আলম লাভলু বলেন, কাজের নির্দিষ্ট নকশা ও বরাদ্দে অসঙ্গতি ছিল। এছাড়া অর্থ পরিশোধে পৌর কর্তৃপক্ষের গড়িমসিও ছিল। এ কারণে বাকি কাজ বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর খুঁটিগুলো নদীতে দাঁড়িয়ে থাকলেও ওপরের কাঠামো এখনও নির্মাণ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু না থাকায় রোগী, শিক্ষার্থী ও কৃষিপণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ঠাকুরদাস এলাকার বাসিন্দা কাজল আহমেদ বলেন, বর্ষায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কলার ভেলা বা ডিঙি নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়। শুষ্ক মৌসুমে কাদা-পানি পেরিয়ে চলতে হয়।
হারাগাছ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. হামিদুর রহমান জানান, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদকে সম্পৃক্ত করতে জনস্বার্থে ঠাকুরদাস মস্তেরপাড় এলাকায় সরকারি উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে কয়েকটি ধাপে মরা তিস্তা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণকাজ হচ্ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে দরপত্র অনুযায়ী সেতুর পিলার, পায়ারক্যাপ ও অ্যাবাটমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
হামিদুর রহমান জানান, বর্তমানে পৌর অর্থায়নে সেতুটির বাকি নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব নয়। সেতুটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করতে ১০টি স্ল্যাব, রেলিং ও দুই পাড়ে প্রায় ১২০ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এ অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
হামিদুর রহমান আরও জানান, সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঢাকায় যোগাযোগ চলছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলে দরপত্রের মাধ্যমে বাকি কাজ শেষ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হারাগাছ পৌর প্রশাসক মো. মহিদুল হক বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। খোঁজ নিয়ে সেতু নির্মাণ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।