গোপালগঞ্জে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫

গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে রমজান মুন্সী (৩২) নামের আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর ফলে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।
নিহত রমজান মুন্সী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার আকবর মুন্সীর ছেলে। রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, ঢামেকের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে রমজানের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
রমজানের ভাই হিরা মুন্সী জানান, ঘটনার দিন (বুধবার, ২৬ জুলাই) রিকশায় যাত্রী নামিয়ে সদর এলাকার সিনেমা হলের কাছ দিয়ে ফিরছিলেন তিনি। এ সময় তিনি সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান হাতের কব্জির ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে।
হিরা মুন্সী আরও জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এক দিন পরে ঢামেকে তার মৃত্যু হলো।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে পুরো শহরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের মধ্যে চারজন নিহত ও অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলেন— শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (৩০), কোটালিপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (১৭), শহরের শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন।
সংঘাতের শহরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার রাত থেকে কারফিউ জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় কারফিউয়ের মেয়াদ শুক্রবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কারফিউ চলাকালে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শহরের বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে।
রাস্তাঘাটে জনসাধারণের চলাচল প্রায় নেই বললেই চলে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে না বের হতে অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে সহিংসতায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।