পাল্টাপাল্টি অবস্থান, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত

বিএনপির দুই পক্ষের পাল্টা-পাল্টি অবস্থানের কারণে বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় আগামীকাল ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা এড়াতে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির নেতাদের স্থগিতের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাজিতপুরের নাজিম উদ্দিন ভুঁইয়া মাঠে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল এবং উদ্বোধক হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) শরিফুল আলমের উপস্থিত থাকার থাকার কথা ছিল।
শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে আহ্বায়ক করে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পাঁচ বছর পর আগামীকাল শনিবার বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর আগে কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু ২০১৫ সালের ১৮ মে মারা যাওয়ার পর শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে সভাপতি ও মনিরুজ্জামান মনিরকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়।
দীর্ঘদিন সময় পেয়েও সম্মেলন ও র্পূণাঙ্গ কমিটি না করতে পারার ক্ষোভ থেকে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালের প্রতিপক্ষ নেতারা অবিলম্বে বর্তমান কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করেন। এ অংশের নেতাদের মধ্যে আছেন পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এহসান কুফিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কাইয়ুম খান হেলাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর জলিল, জেলা যুবদলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মামুন, হালিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাজল ভুঁইয়াসহ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আরও অনেকেই।
সবশেষ গত ২ জুলাই তৃণমূল নেতাদের মতামতকে উপেক্ষা করে সম্মেলন আয়োজনের প্রতিবাদে বাজিতপুর উপজেলা সদরের বাঁশমহালে অনুষ্ঠিত জনসভায় এ অংশের বক্তারা অবিলম্বে সম্মেলন স্থগিতের জোরালো দাবি জানান। অন্যথায় যেকোনো মূল্যে সম্মেলন প্রতিহত করার হুমকি দেন।
জনসভায় এহসান কুফিয়া বলেন, তৃণমূলকে বাদ দিয়ে অবৈধ কমিটি কর্তৃক অবৈধ সম্মেলন করার অপতৎপরতা চলছে। কাউকে বাদ দিয়ে নয়, সবাইকে নিয়ে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে—এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। তাই সম্মেলন স্থগিত করতে হবে।
কাইয়ুম খান হেলাল বলেন, তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগীদের নিয়ে একতরফা ও মনগড়া সম্মেলন অনুষ্ঠানের পাঁয়তারা চলছে। তাই এই সম্মেলন আমরা মানি না। প্রয়োজনে কাফনের কাপড় পরে সম্মেলন প্রতিহত করব।
মীর জলিল বলেন, আগামী ৫ তারিখ কেউ সম্মেলনে এলে তাঁকে ফিরে যেতে দেওয়া হবে না।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, আগামীকালের সম্মেলন নিয়ে দলে মতবিরোধ আছে। এ অবস্থায় সবাইকে একসঙ্গে না নিয়ে নেতৃত্ব ঘোষণা করা দলের জন্য ভালো হবে না। তাই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। পরে সবার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
ফোন বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে আহ্বায়ক শেখ মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।