যশোরে বৈষম্যবিরোধীনেতার পদত্যাগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (৩০ জুন) দিনগত রাত ২টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি সংক্ষিপ্ত স্ট্যাটাসে তিনি এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলার আহ্বায়ক পদ থেকে আমি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিচ্ছি এবং একই সাথে এনসিপি ও এর ছাত্র কিংবা যুব উইংয়ের সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
রাশেদ খানের এই আকস্মিক ঘোষণায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরে তিনি একই পোস্টের মন্তব্য অংশে পদত্যাগের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
কমেন্টে রাশেদ খান লিখেন, ‘আমি সবসময় আমার শ্রম, মেধা, অর্থ, ধৈর্য ও সময় ব্যয় করে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। কতটা পেরেছি সেটা আপনারা বিচার করবেন। তবে আমার নিজের দৃষ্টিতে বলব, আরও ভালো কিছু হওয়া উচিত ছিল।’
অর্থসংকট ও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে রাশেদ বলেন, ‘আমি একজন শিল্পী। পেশাগত কোনো কাজে দীর্ঘদিন যুক্ত না থাকায় আর্থিক কষ্টে আছি। আমার বিরুদ্ধে ব্যাংক ব্যালেন্স বা টাকার বিষয়ে যে মুখরোচক গল্প তৈরি করা হয়, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ চাইলে এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে আমি প্রস্তুত।’
বামপন্থী ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা রাশেদ খান আরও বলেন, ‘জুলাই আমি বিক্রি করিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিখিত কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ না থাকলেও আমার নিজস্ব মতাদর্শ আছে, যা সবার সঙ্গে মিল নাও থাকতে পারে। তবুও এই প্ল্যাটফর্মে অসংখ্য ভালো কাজ করার সুযোগ পেয়েছি- এটা আমার গর্ব।’
রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা না থাকায় সংগঠন সারাদেশে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউনিটগুলো সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া এনসিপি, যুবশক্তি, বাগছাস ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারা এই সংগঠনকে প্রভাবিত করছেন। নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটি একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন করে গঠিত হয়েছে, যা অনেক জেলার মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।’
সংগঠনের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সবসময় শুভকামনা থাকবে। গণমানুষের কল্যাণে যারা কাজ করছেন, তাদের আমি শ্রদ্ধা করি।’
২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটি রাশেদ খানকে আহ্বায়ক ও জেসিনা মোর্শেদ প্রাপ্তিকে সদস্যসচিব করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেয়। এরপর কমিটির অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ এবং ছাত্রলীগ নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠলে যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহসহ আটজন পদত্যাগ করেন। উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বহিষ্কার করা হয় সদস্যসচিব জেসিনা মোর্শেদকে।